টেকনাফে স্কুলের সীমানা বিরোধের জেরে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

কক্সবাজারের টেকনাফে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে এক স্কুলশিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, স্কুলের সীমানা বিরোধের জের ধরে স্থানীয় দুই ব্যক্তি এ হামলা চালান।

এ ঘটনায় ওই দুই ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তারা রাতে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

বুধবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের হামিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার নুরুল হোছাইন স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নুরুল ইসলাম প্রায় ২১ বছর ধরে ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মীর কাশেম (৪৬) ও মো. হারুন (৩২)। নুরুল হোছাইন মামলায় তাঁদের দুজনকে আসামি করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী ৩০ লাখ শহীদের স্মরণে বুধবার সারা দেশে একযোগে ৩০ লাখ গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই স্কুলে ৫০টি গাছের চারা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে নুরুল হোছাইন ওই গাছগুলো রোপণের জন্য স্কুলের সীমানায় ৫০টি গর্ত খোঁড়েন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে স্থানে গর্ত খোঁড়া হয়, তা নিয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজনের সীমানা বিরোধ রয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রধান শিক্ষক নুরুল হোছাইন গর্ত খোঁড়া শেষে পঞ্চম শ্রেণির কক্ষে পাঠদানের জন্য প্রবেশ করেন। এর পরপরই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা গালিগালাজ করতে করতে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে তাঁকে মারধর করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের চিৎকারে অন্য শিক্ষকেরা এসে নুরুল হোছাইনকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আফরোজা সুলতানা এ্যানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নুরুল হোছাইনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। তাঁকে এক্স-রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সীমানাপ্রাচীর নিয়ে বিরোধে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে একজন শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের সামনে মারধর করা খুবই দুঃখজনক।’

জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিৎ কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করতে পুলিশের একটি দল এখনো অভিযানে রয়েছে। এখন পর্যন্ত (বুধবার রাত ১০টা) তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই শিক্ষককের সঙ্গে আমি দেখা করেছি। মারধরে চিহ্ন দেখা গেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযুক্ত হারুনের বাবা জহির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নুরুল হোছাইনকে মারধর করার কথা শুনেছি। বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে বলেছি। এ সময় হারুনের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি বলেন, সে বাড়ি নেই।’