পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলায় চার আসামির স্বীকারোক্তি

মামুন ইমরান খান
মামুন ইমরান খান

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান ওরফে মামুন হত্যা মামলায় চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এঁরা হলেন নিহত মামুনের বন্ধু রহমত উল্লাহ, মিজান শেখ, মেহেরুন্নেছা ঝর্ণা ওরফে আফরিন ও ফরিয়া বিনতে মীম।

আদালত সূত্র বলছে, বুধবার আসামি রহমত উল্লাহ এবং অপর তিনজন বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া সুরাইয়া আক্তার কেয়া নামের এক আসামিকে তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

১০ জুলাই পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খানের লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরের জঙ্গলে। মামুনের পরিবার বলেছে, ৮ জুলাই অফিস শেষে ঢাকার বাসাবোর বাসায় ফেরেন বিকেলে। সন্ধ্যার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, আসামি রহমত উল্লাহ পেশায় একজন প্রকৌশলী। মামুনের সঙ্গে তাঁর চার থেকে পাঁচ বছর ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাঁরা দুজনে বিভিন্ন নাটক ও সিরিয়ালে অভিনয় করতেন। গ্রেপ্তার আফরিনের সঙ্গে রহমত আগে অভিনয় করেছেন। আফরিন তাঁর বান্ধবীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে রহমতকে দাওয়াত দেন। রহমত বনানীর বাসায় মামুনকে আসতে বলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন বলেন, মামুন ও রহমত বনানীর ফ্ল্যাটে গেলে হঠাৎ করে স্বপন, দিদার, আতিক ও মিজান বাসায় ঢুকে অনৈতিক কাজের অভিযোগে মামুন ও রহমতউল্লাহকে আটকে রেখে মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে মামুন মারা যান। মামুন মারা গেলে তাঁরা হতবিহ্বল হয়ে যান। পরে তাঁরা মামুনের লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। গাজীপুরের উলুখোলা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি জঙ্গল মামুনের বস্তাবন্দী লাশ ফেলে দেন। কেউ যাতে তাঁর পরিচয় না বের করতে পারে, সে জন্য লাশে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খুনিরা যখন জানতে পারে মামুন পুলিশ, তখন তাঁকে মারধর করে হত্যা করেন আসামিরা। বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকার একটি বাসাতে ফেলে মামুনকে খুন করা হয়। বনানী থানার কাছাকাছি এলাকাতে বাসাটির অবস্থান। ছয়তলা বাসার মালিক সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রী।

দুই মাস আগে নজরুল ইসলাম নামের এক লোক বাসার দুই তলার একটি কক্ষ ভাড়া নেন। বাসার ব্যবস্থাপক মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভাড়া নেওয়ার পর বাসায় কেউ থাকতেন না। দিদার নামের এক নিরাপত্তারক্ষী ওই বাসাতে থাকতেন। দু-একটি চেয়ার-টেবিল ছাড়া আর কিছুই ছিল না বাসার মধ্যে। মাঝেমধ্যে শেখ হৃদয় নামের এক লোক সেখানে আসতেন।