দুধের লিটার ২০ টাকা

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

পাবনার সুজানগর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গত এক সপ্তাহে দুধের দরপতন হয়েছে। ৪০ থেকে ৪৫ টাকার প্রতি লিটার দুধ বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে লোকসানে পড়ে চরম হতাশায় রয়েছেন খামারিরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৬০০ দুগ্ধ খামার রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় আড়াই হাজার কৃষক বাড়িতে গাভি পালন করেন। এসব খামার ও গাভি থেকে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। উৎপাদিত দুধ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ক্রয়কেন্দ্রে বিক্রি করেন। উপজেলায় আড়ং, প্রাণ, আকিজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৫টি ক্রয়কেন্দ্র আছে।

উপজেলার ছয়-সাতজন খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও উপজেলার হাটবাজার ও ক্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রতি লিটার দুধ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ক্রয়কেন্দ্রগুলো দুধ কম নিচ্ছে। ফলে হাটবাজারে দুধের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দরপতন দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন ধরে প্রতি লিটার দুধ ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খামারিদের গোখাদ্যের খরচও উঠছে না। ফলে তাঁরা চরম হতাশার মধ্যে রয়েছেন।

গতকাল বুধবার উপজেলা সদরের সুজানগর হাট, বনখোলা হাট, সাতবাড়িয়া বাজার ও নাজিরগঞ্জ বাজারে খোঁজ নিয়ে একই দামের খবর পাওয়া গেছে। বিক্রি করতে না পেরে বহু খামারি হাটবাজার থেকে দুধ ফিরিয়ে নিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অনেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফেরি করেও দুধ বিক্রি করছেন।

উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের খামারি বজলুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমে গাভি নতুন গজানো কাঁচা ঘাস পায়। ফলে দুধের উৎপাদন বাড়ে। এই সময় বেসরকারি ক্রয়কেন্দ্রগুলো চাহিদা বাড়ানোর পরিবর্তে কমিয়ে দিয়েছে। ফলে এই দরপতন হয়েছে।

উপজেলার বড়ইপাড়া গ্রামের গাভি পালনকারী কৃষক রতন প্রামাণিক বলেন, বর্তমানে যে দামে দুধ বিক্রি হচ্ছে, তাতে গোখাদ্যের দামই উঠছে না। ঋণ করে গাভির জন্য খাবার কিনতে হচ্ছে। ফলে খামারি ও গাভি পালনকারীরা চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

বনখোলা গ্রামের খামারি মঞ্জুর আলম বলেন, ‘এবাই বাজারে গরুর খাদ্যর দাম বেশি। তারপর যদি দুধির দাম এ রহম থাকে, তালিপারে গরু বেচে খাবার কিনা ছাড়া আমাগের আর কোন উপায় থাকপিনানে।’

প্রাণ ও আকিজের সরবরাহকারী আবদুস সালাম মোল্লা বলেন, খোলাবাজারে দুধের চাহিদা কমে যাওয়া ক্রয়ও কমে গেছে। চাহিদা বাড়লে ক্রয় বাড়ানো হবে।