কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কক্সবাজারে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৪

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পুলিশের সঙ্গে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় র‍্যাবের সঙ্গে এবং কক্সবাজারের চকরিয়ায় ‘মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে’ কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে মাদকবিরোধী অভিযানকালে পৃথক এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, নিহত ব্যক্তিরা মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।

কুষ্টিয়ায় শামছুদ্দীন ওরফে শাম (৩৮) ও সৈয়দপুরে আবদুর রহিম (৪৫) এবং কক্সবাজারের চকরিয়ায় মো. ইসমাইল ওরফে ডাইল ইসমাইল (৩৮) নিহত হন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।

কুষ্টিয়া: ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ভেড়ামারা বাঁকাপুল চরদামুকদিয়া এলাকায় একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক কেনাবেচা করছে—এমন খবরের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল সেখানে অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে। ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই তাঁর লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসা হয়।

ঘটনাস্থল থেকে ৫০০টি ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি গুলি ও দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

ওসি জানান, নিহত মাদক ব্যবসায়ী শামছুদ্দীন ভেড়ামারা ক্ষেমিরদিয়াড় এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় আটটি মাদকের মামলা রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: র‌্যাব-৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মদ সাঈদ আবদুল্লাহ আল মুরাদের ভাষ্য, মাদকের একটি বড় চালান সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান গ্রামের শেষ মাথায় আসছে—এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে রাত দেড়টার দিকে অভিযানে যান র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটে। গোলাগুলি থামার পর ঘটনাস্থল তল্লাশি করে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, চারটি গুলি ও ১১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

দিনাজপুর: জেলার পার্বতীপুরে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবদুর রহিম নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে পার্বতীপুর-সৈয়দপুর সড়কের পার্বতীপুর উপজেলার বান্নিরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুর রহিম পার্বতীপুর শহরের পুরোনো বাজার রেলগেট এলাকার মৃত গোলাম নবীর ছেলে।

পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান বলেন, রাত তিনটার দিকে বান্নিরঘাট এলাকায় দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়ে। এতে আবদুর রহিম গুলিবিদ্ধ হলে অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুর রহিমকে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ঘটনাস্থল থেকে ১০০ পিস ইয়াবা, ৫০ বোতল ফেনসিডিল, একটি শুটারগান ও একটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত আবদুর রহিমের নামে হত্যা, মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন অপরাধে কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়ায় মো. ইসমাইল ওরফে ডাইল ইসমাইল নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল ছয়টার দিকে চকরিয়া-লামা সড়কের কুমারী সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ইসমাইল চকরিয়া পৌরসভার কোচপাড়ার মৃত আবদুস সালামের ছেলে।

পুলিশ দাবি করছে, ইসমাইল চকরিয়া উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে দেশে তৈরি একটি একনলা বন্দুক, দুটি কার্তুজ ও ৪৬৫টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।

চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে চকরিয়া-লামা সড়কের ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী সেতু এলাকায় মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় মাদক কারবারিরা। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইসমাইলের মরদেহ, একটি বন্দুক, দুটি কার্তুজ ও ৪৬৫টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, ইসমাইলের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পাঁচটি ও আরেকটি মারামারির মামলা রয়েছে। তাঁর মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।