জাতিসংঘ ই-গভর্নমেন্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে নয় ধাপ এগোল বাংলাদেশ

‘জাতিসংঘ ই-গভর্নমেন্ট র‍্যাঙ্কিং-এ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। ২২ জুলাই। ছবি: সংগৃহীত
‘জাতিসংঘ ই-গভর্নমেন্ট র‍্যাঙ্কিং-এ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। ২২ জুলাই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে গত ছয় বছরে উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট জরিপে ১৫০তম স্থান থেকে ১১৫তম অবস্থান অর্জন করেছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগ (ইউএনডেসা) পরিচালিত ই-সরকার ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (ইজিডিআই) অনুযায়ী, বাংলাদেশ ০.৪৭৬৩ পয়েন্ট পেয়ে এবং গত দুই জরিপে ৩৫ ধাপ এগিয়ে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১১৫তম স্থানে অবস্থান করে নিয়েছে। ২০১৬ সালের জরিপে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৪তম, ২০১৪ সালে ১৪৮তম ও ২০১২ সালে অবস্থান ছিল ১৫০তম।

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনডেসা প্রকাশিত জরিপে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, শেখ হাসিনা সরকার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নানান উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে দিন দিন অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” এবং “রূপকল্প ২০২১” বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে। মানবসম্পদ সূচক ও টেলিকমিউনিকেশন সূচককে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। ডেটার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে সিআরভিএস, ওপেন ডেটা পোর্টাল, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, এসডিজি পোর্টাল, বিগ ডেটা উদ্যোগ ইত্যাদিসহ নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে; যা বাস্তবায়িত হলে অনলাইন সার্ভিস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও ভালো হবে।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, ‘গত নয় বছর ধরে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সহজলভ্যতা, সক্ষমতা ও সচেতনতা—এই তিনটি বিষয় নিশ্চিত করতে না পারলে কোনো দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়বে না। এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কয়েকটি স্বল্পোন্নত দেশের সঙ্গে ইতিমধ্যে এটুআই চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের মতো করে ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা যায়।’

সংবাদ সম্মেলনে একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী বলেন, ‘জরিপে অবস্থান তৈরিতে আমরা পাঁচটি পদ্ধতি গ্রহণ করেছি। এক. বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ড্যাসবোর্ড তৈরি করেছি। এদের মধ্যে একধরনের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দুই. সৃষ্ট এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তসম্পর্ক তৈরি করা হয়েছে, যা অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল সেবার প্রতি সব কটি প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহী করে তুলেছে। তিন. ইউএনডেসার সহযোগিতায় আমরা সরকারি বিশাল ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ শুরু করেছি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আইসিটি ফর এসডিজি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পরিণত হয়েছি। চার. সরকারের বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে বিভিন্ন পদ্ধতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। পাঁচ. আমরা এখন প্রযুক্তিগত কাঠামো তৈরি করতে বিভিন্ন প্রায়োগিক কৌশল প্রয়োগ করতে সক্ষমতা অর্জন করেছি।’

সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ, একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।