বিচার চাইলেন সেই রাকিবের মা

রাকিবের মা রিতা আক্তার
রাকিবের মা রিতা আক্তার

পুলিশ ধরে নিয়ে কিশোর ছেলে রাকিব হাওলাদারকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তুলে বিচার চাইলেন মা রিতা আক্তার। এমনকি তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর দায়ের করা মামলার নথি লুকিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রোববার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।

থানায় হত্যার পর রাকিবকে পুলিশ কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হিসেবে দেখায় বলে অভিযোগ ওঠে রাজধানীর ওয়ারী থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশের দাবি, গত ৬ এপ্রিল রাতে ওয়ারীর টয়েনবি সার্কুলার রোডের একটি গলিতে ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশ ও ডাকাতদের পাল্টাপাল্টি গুলির মধ্যে ডাকাতদের একজন মারা যায়।

রাকিবের মৃত্যু নিয়ে গত ১০ জুলাই ‘চাপে পড়ে ছেলের হত্যা মামলা তুলে নিতে বাধ্য হন মা’ শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

নিহত রাকিব
নিহত রাকিব

সংবাদ সম্মেলনে রিতা আক্তার অভিযোগ করেন, রাকিবকে যেদিন পুলিশ আটক করে, সেদিনই তিনি ওয়ারী থানায় গেলে পুলিশ বলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাকিবকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ছেলের লাশ পান। এ ঘটনায় তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করলে ওয়ারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে তাঁর বাসায় যান। সেখানে পুলিশের এসআই জাকির পিটিয়ে জবরদস্তি করে একটি কাগজে তাঁর (রিতা) স্বাক্ষর নেন। ওই কাগজে স্বেচ্ছায় মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের কথা লেখা ছিল। পরদিনই তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে নারাজি দেন। নারাজি দেওয়ার এক সপ্তাহ পর তাঁকে বাসা থেকে ধরে ওয়ারী থানায় নিয়ে যান ওসি রফিক। সেখানে ওসি আড়াই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি রফা করে ফেলতে চাপ দেন।

রিতা অভিযোগ করেন, এতে রাজী না হলে পুলিশ অন্য পথ ধরে। কয়েক দিন পর রিতার আইনজীবী মামলার কাগজপত্র ফেরত দিয়ে মামলা চালাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর রিতা নতুন আইনজীবীর দ্বারস্থ হন। কিন্তু এখন মামলার নথিপত্রই পাচ্ছেন না। মামলার শুনানি, সাক্ষী এসব বিষয়েও তাঁকে তথ্য দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রিতার।

ওসি রফিকুল এর আগে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছিলেন, নিহত রাকিব ছিনতাইকারী। সে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র খন্দকার আবু তালহা হত্যায় যুক্ত ছিল।