'আমার স্বামীকে মুক্তি দিন'

রিজু আক্তার চৌধুরী
রিজু আক্তার চৌধুরী
>

• পাঁচ সদস্যের পরিবারে মোজাম্মেল একমাত্র উপার্জনক্ষম
• কারাবন্দী হওয়ার পর মোজাম্মেলের পরিবার এখন অসহায়
• চাঁদাবাজির মামলায় মঙ্গলবার মোজাম্মেলের জামিন হয়
• বিস্ফোরক মামলায় মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তারের আবেদন
• পুলিশের আবেদনের কারণে মোজাম্মেল ছাড়া পাননি

কথিত চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁর স্ত্রী রিজু আক্তার চৌধুরী।

গতকাল বুধবার রিজু আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ সদস্যের পরিবারে তাঁর স্বামী একমাত্র উপার্জনক্ষম। কারাবন্দী হওয়ার পর তাঁদের পরিবার এখন অসহায়। মোজাম্মেল হক চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের ঢাকা ব্যুরোপ্রধান। সেখান থেকে যে বেতন পান, তা দিয়েই তাঁদের সংসার চলে। ভাড়া কম বলে তাঁরা নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় থাকেন।

রিজু আক্তার বলেন, মো. দুলাল নামের এক পরিবহনশ্রমিক মিরপুর থানায় মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহারে মোজাম্মেলের পদ-পদবি কিংবা তাঁর ঠিকানাও উল্লেখ করা ছিল না। আর মামলার বাদী দুলালকে তাঁরা চেনেনই না। এজাহারে দুলালের ঠিকানাও ছিল ভুল। তিনি চিড়িয়াখানাগামী বাসের লাইনম্যান হলেও মামলার এজাহারে নিজেকে মিরপুর রোড শ্রমিক কমিটির সম্পাদক বলে উল্লেখ করেন। ইতিমধ্যে দুলাল গণমাধ্যমে শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দুই নেতার নাম উল্লেখ করে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন, মামলার কথা না জানিয়ে তাঁর সই নিয়ে মামলা করেছেন। এ জন্য তিনি মাফও চেয়েছেন। এতেই বোঝা যায়, যাত্রীদের অধিকার ও নিরাপদ সড়ক নিয়ে কথা বলায় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।

রিজু আক্তার বলেন, মামলার বাদী লাইনের বাস থেকে ১০ টাকা করে চাঁদা তোলেন। শ্রমিক সংগঠনের দেওয়া বেতনে তাঁর সংসার চলে। তাহলে দুলাল চাঁদা দেবেন কোত্থেকে?। তিনি জানান, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে দেশের কোনো থানায় মামলা নেই। আদালতে দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে মামলা না থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

রিজু আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মিরপুর থানায় চাঁদাবাজির একটি মিথ্যা মামলায় গত মঙ্গলবার আদালত তাঁর স্বামীকে জামিন দিয়েছেন। কিন্তু কাফরুল থানায় বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় পুলিশ আদালতে তাঁকে গ্রেপ্তারের আবেদন করেছে। সে কারণে তাঁর স্বামী কারাগার থেকে বের হতে পারেননি। এটিও একটি মিথ্যা মামলা। তিনি বলেন, মোজাম্মেল যদি ওই ঘটনায় জড়িত থাকতেন, তাহলে তখন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করল না কেন?

রিজু আক্তার আরও বলেন, মোজাম্মেল কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে তিনি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন। সড়কের অব্যবস্থাপনা এবং যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০১০ সালে তিনি কিছু একটা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৪ সালের ৩ জুলাই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে তিনি একাই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতি চালু করেন। এরপর থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তথ্য দিতে থাকেন তিনি।

মোজাম্মেল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁর দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন। মোজাম্মেলের স্ত্রী রিজু আক্তারের দাবি, যাত্রীদের কল্যাণে বিভিন্ন কথা বলার কারণে তাঁর স্বামীকে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।