ট্যানারির কারণে এবার ধলেশ্বরীতে দূষণ

ট্যানারি শিল্প রাজধানীর হাজারিবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সেখানকার ধলেশ্বরী নদীও দূষণের শিকার হচ্ছে। ট্যানারির বর্জ্যের কারণে ধলেশ্বরী নদী দূষণের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংসদীয় কমিটি।
বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, বৈঠকে জানানো হয়, সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে এখন ১১৫টি ট্যানারি উৎপাদনে আছে। ট্যানারির তরল বর্জ্য পরিশোধনের জন্য বিসিকের নির্মিত ২৫ হাজার ঘনমিটার/দিন ক্ষমতাসম্পন্ন সিইটিপিতে ফ্লুয়েন্ট পাওয়ার সিস্টেমের মাধ্যমে তরল বর্জ্য স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সিইটিপির পরিশোধিত তরল বর্জ্য ও অপরিশোধিত তরল বর্জ্য এবং ধলেশ্বরী নদীর ১০০ মিটার উজানে ও ২০০ মিটার ভাটি থেকে প্রতি মাসে পরিবেশ অধিদপ্তরের গবেষণাগারের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করে ফলাফলে দেখা যায়, বিভিন্ন ক্ষতিকর তরল বর্জ্য (সিওডি, বিওডি এবং টোটাল ক্রমিয়াম, টিডিএস, ক্লোরাইড) বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালার মানমাত্রার বাইরে।

বৈঠক শেষে হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, হাজারিবাগের ট্যানারি শিল্প সাভারে স্থানান্তরিত হওয়ায় পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ ধলেশ্বরী নদী দূষণের বিষয়ে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, চীনের একটি কোম্পানির মাধ্যমে সিটিপি স্থাপন করা হয়েছে, সেটি তারা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছে না। যারা অদক্ষভাবে সিটিপি পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

হাছান মাহমুদ বলেন, সংসদীয় কমিটি এলপিজি বোটলিং প্লান্টকে কেন লাল থেকে সবুজ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে, সে ব্যাখ্যাও চেয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা কমিটির কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। যে কারণে পরবর্তী বৈঠকে এই ব্যাপারে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পলিথিনের বিকল্প উপকরণ সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া এবং পলিথিনের ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রচার চালানোর সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এ ছাড়া সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পলিথিন বন্ধে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে একটি পক্ষ পালনের সুপারিশ করা হয়। পর্যটন এলাকার আকর্ষণ বজায় রাখতে এবং বন ও পরিবেশের ক্ষতি এড়ানোর জন্য জাফলং এলাকা থেকে দূরে কোথাও পাথর ক্রাশিং জোন স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, নবী নেওয়াজ, মো. ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী, মো. ইয়াসি আলী এবং মেরিনা রহমান বৈঠকে অংশ নেন।