জাতীয় ঐক্যের সংজ্ঞা দিলেন তোফায়েল

তোফায়েল আহমেদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
তোফায়েল আহমেদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘জাতীয় ঐক্য কাকে বলে? যখন সমস্ত দল এক হয়ে যায়, তাকে জাতীয় ঐক্য বলে। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মতো বড় দল বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হয় কীভাবে?’ তিনি বলেন, ‘নীতিহীন নেতাদের মানুষ পছন্দ করে না। কিছুদিন পর দেখবেন বি. চৌধুরী ময়মনসিংহে আর ড. কামাল হোসেন থাইল্যান্ডে।’

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ শুক্রবার ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এই অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ এ মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি। পরে দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সভাপতিত্ব করেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘দলছুট ও নীতিহীন নেতাকে মানুষ পছন্দ করে না। ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আসন থেকে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে গিয়ে নির্বাচন করে জিততে পারেননি। তিনি বলেন, কিছুদিন পর দেখবেন জাতীয় ঐক্যের একেক জন একেকটা বলবে।’

বিএনপির উদ্দেশে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে একটি দেউলিয়াপনা দল। দলটির দলীয় প্রধান কারাগারে, তাঁর ছেলে বিদেশে পলাতক। এমন একটি দল, যেখানে একজনের সঙ্গে আরেকজনের মিল নেই। এ সময় নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগে যেকোনো দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, নির্বাচন ঠেকানোর ক্ষমতা কারও নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবে এ দেশেও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির একটিই টার্গেট, সেটি হচ্ছে শেখ হাসিনাকে হটানো। সব ষড়যন্ত্র এই একজনকে ঘিরে। ঐক্যবদ্ধভাবে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ শক্তির যে বিষবৃক্ষ, শাখা-প্রশাখা আজকে বিস্তার করেছে, এই সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটিত করে আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতামুক্ত ও অশুভ শক্তির করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করবে না। দেশের শান্তি যারা বিনষ্ট করবে, যারা দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা জিম্মি রেখে মাঠ দখল ও ঢাকা অচল করার চিন্তা করে, তাদের জনগণই অচল করে দেবে।’

সভাপতির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘সারা বিশ্বে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবে এ দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যারা অপশক্তিকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসতে চায়, তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না। সব অপশক্তিকে পরাজিত করে আবারও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও জয়ী করার জন্য তিনি নেতা-কর্মীদের শপথ নিতে বলেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবউল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।