এক মাসে অনেক পরিবর্তন আসবে: মওদুদ

মওদুদ আহমদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মওদুদ আহমদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, আগামী এক মাসে অনেক পরিবর্তন আসবে। এক মিনিটের ব্যবধানে সংলাপে বসতে সরকার বাধ্য হবে, বিএনপির দাবি মেনে নিতে বাধ্য হবে। সরকার যদি ভাবে জোর করে ক্ষমতায় থাকবে, এবার এটি সম্ভব হবে না।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় মওদুদ আহমদ এ মন্তব্য করেন। ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘চেতনা বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন।

মওদুদ আহমদ বলেন, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে অপসারণ করা হবে। জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্য নষ্ট করতে সরকার অনেক ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী ও জোরদার হবে। সারা বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা হবে। কারণ একটি স্বৈরাচার সরকারকে সরাতে হলে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুপরিকল্পিতভাবে নষ্ট করতে ক্ষমতাসীনেরা একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যার কারণে বিএনপির সক্রিয় কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সুন্দর পরিবেশ আছে। কথাটি সত্য নয়। কারণ বাংলাদেশে কোনো সাধারণ নির্বাচন করার ন্যূনতম পরিবেশ এখন নেই। তিনি আরও বলেন, ভোটের জন্য ন্যূনতম পরিবেশ থাকা প্রয়োজন। সরকার এটা চায় না। কেন চায় না? কারণ সরকারের উদ্দেশ্য খুব খারাপ। তারা আগের মতো আরেকটা নির্বাচন করতে চায়। একদলীয়ভাবে একটা নির্বাচন করতে চায়। বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে এটা আর কোনো দিন হতে দেওয়া হবে না।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি উপযুক্ত কর্মসূচি দেবে। যে কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারের পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। পরিস্থিতি বলে দেবে, কী ধরনের কর্মসূচি দিতে হবে। আগামী এক মাসে অনেক পরিবর্তন দেখতে পারবেন।

নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার বলতে সংবিধানে কিছুই নেই। তার মানে, সরকার সংবিধান থেকে সরে আসতে চাচ্ছে। সরে এসে একটি নির্বাচনকালীন সরকার করবে। এটি হবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। প্রশাসন, পুলিশ ও র‍্যাব তাঁদের অধীনে থাকবে। তাঁদের অধীনেই নির্বাচন হবে। তবে নাম দেওয়া হবে নির্বাচনকালীন সরকার। মুখে বলবে রুটিন অনুযায়ী কাজ করার কথা, কিন্তু সংবিধান তো বলে না যে তাঁরা রুটিন অনুযায়ী কাজ করবে।

সরকারের উদ্দেশে মওদুদ আহমদ আরও বলেন, সরকার সংবিধান থেকে যদি সরে আসতে রাজি হয়, তাহলে বিএনপির প্রস্তাব মানতে অসুবিধা কোথায়? সংবিধান তো কোনো দিন বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। অতীতেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনকে প্রধান বিচারপতি রেখে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেটা অসাংবিধানিক ছিল। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একাদশ সংশোধনী এনে তাঁকে বৈধতা দেওয়া হলো। তিনি বলেন, যতই অত্যাচার ও নির্যাতন করা হোক না কেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ  জয়লাভ করতে পারবে না। আর নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই সরকার একদলীয়ভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। যত পারেন পোস্টার ও ব্যানার লাগান, কিন্তু ভোট নেই।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম প্রমুখ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শামীমা রহিমের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।