ধর্মঘট প্রত্যাহার, কাঁচাবাজারে প্রভাব পড়েনি

সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের প্রতিবাদের দ্বিতীয় দিনেও তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো গাড়ি। সারা দেশে ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে এ প্রতিবাদ করছেন ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক-চালকেরা। তেজগাঁও, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার
সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের প্রতিবাদের দ্বিতীয় দিনেও তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো গাড়ি। সারা দেশে ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে এ প্রতিবাদ করছেন ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক-চালকেরা। তেজগাঁও, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার

তিন দিনের পণ্য পরিবহনে ট্রাক–কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ধর্মঘট চললেও কাঁচা বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছুটা বাধার মুখে পড়েছে তাদের পণ্য বহনকারী যান। তবে এখন পর্যন্ত সমস্যা হয়নি। এ কারণে দাম বাড়নি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধর্মঘট আরও কিছুদান চললে সবজির বাজারে এর প্রভাব পড়তো।

গত রোববার থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত ধর্মঘট চলে। দুপুরে সচিবালয়ের মালিক–শ্রমিকদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৈঠক করে। পরে সরকারের আশ্বাসে বিকেলে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিকেরা।

সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে গত রোববার থেকে মাঠে নামে পরিবহনমালিক ও শ্রমিকেরা। ঢাকা বিভাগের ১৭টি জেলায় সব ধরনের পণ্য পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন তাঁরা। ১২ অক্টোবরের মধ্যে আইন সংশোধন করা না হলে পরিবহন ধর্মঘটসহ বৃহত্তর কর্মসূচির হুমকি দেওয়া হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সবজি বাজার চাঙা। ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো। তাই দামের ক্ষেত্রে তেমন ওঠা-নামা নেই। সুলতান আলী নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বেশির ভাগ মালামাল কারওয়ান বাজার থেকে আনি। বসিলার দিকে থেকে যা আসে সেগুলো আনতে একটু সমস্যা হইছে। কিন্তু রিকশা-ভ্যান দিয়ে নিয়ে আসছি।’ এ বাজারের আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কারওয়ান বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় বাজারে প্রভাব পড়েনি।

মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের চিত্রও একই রকম। নূরন্নবী নামের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, পণ্য পরিবহনে এ রকম ধর্মঘট চলতে থাকলে সবজির দাম বেড়ে যেত। তিনি বলেন, গত তিন দিনে জিনিসপত্রের দামে তেমন প্রভাব পড়েনি।

শ্রমিকদের এ ধর্মঘটে রাজধানীতে ঢোকার বিভিন্ন পয়েন্টগুলোতে ট্রাক, লরি কাভার্ড ভ্যান ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। গাড়ি ভাঙচুর করা ছাড়াও যারা যেসব শ্রমিকেরা পণ্য পরিবহন করছিলেন তাঁদের মারধর ও হেনস্তা করা হয়।

দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারেও সবজির দরদাম আগের মতোই। সাঈদুর রহমান সবজি কিনতে এসেছেন এ বাজারে। তিনি জানান, ‘ধর্মঘটের কথা শুনে দাম বাড়াবে বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু শীতকালীন নতুন সবজির দাম এমনিতেই চড়া। দামের তেমন হেরফের চোখে পড়ছে না।’

কারওয়ান বাজারের কয়েকজন খুচরা সবজি ব্যবসায়ী বলেন, গতকাল সোমবার রাতে ট্রাক তুলনামূলক কম ঢুকেছে। তবে সরবরাহ আগের মতোই আছে। আড়ত ব্যবসায়ী মো. নিজাম বলেন, ‘রাজশাহী থেকে আমার সবজি আসে। গতকাল রাতে আমিন বাজার হয়ে ট্রাক ঢোকার সময়ে দুইটা ট্রাকের কাচ ভেঙে দেয়। তবে সবজি ট্রাক নিয়ে আসতে পারছি। কালকে ট্রাক ঢুকতে একটু সমস্যা হয়েছে।’ তিনি জানান, এ ধর্মঘট আরও কয়েক দিন চললে সবজির দাম বেড়ে যেত।

মাছ, মাংসের দামও এই ধর্মঘটের মধ্যে বাড়েনি।