অপহরণ ও রগ কর্তনের দায়ে পিরোজপুরে চারজনের ১৪ বছরের কারাদণ্ড

রায় শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সামনের সারিতে ময়না আক্তারের সাবেক স্বামী শহিদুল মৃধা (প্যান্ট পরা)। পিরোজপুর জেলা জজ আদালত, ৯ অক্টোবর। ছবি: এ কে এম ফয়সাল
রায় শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সামনের সারিতে ময়না আক্তারের সাবেক স্বামী শহিদুল মৃধা (প্যান্ট পরা)। পিরোজপুর জেলা জজ আদালত, ৯ অক্টোবর। ছবি: এ কে এম ফয়সাল

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় ময়না আক্তার নামে নারীকে অপহরণ ও তাঁর দুই পায়ের রগ কর্তনের দায়ে ৪ ব্যক্তিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত লোকজনের মধ্যে ওই নারীর সাবেক স্বামীও রয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মিজানুর রহমান এ রায় দেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ভুক্তভোগী নারী ময়না আক্তারের সাবেক স্বামী ঝালকাঠি সদর উপজেলার বারুহার গ্রামের শহিদুল মৃধা (৩০), তাঁর বড় ভাই নজরুল মৃধা (৪৭), পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার পূর্ব মাগুরা গ্রামের শহিদ শিকদার (৩২) ও একই উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৩০)।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ মে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামের ময়নার সঙ্গে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বারুহার গ্রামের শহিদুল মৃধার বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুজনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে শহিদুল মৃধা ময়নারর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এরপর ওই বছরের ২ মার্চ রাত ৮টার দিকে শৌচাগার থেকে বের হওয়ার সময় ময়না আক্তারের ওপর চড়াও হন ওই চার ব্যক্তি। তাঁরা মুখোশ পরা অবস্থায় মুখ চেপে ময়নাকে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের মাঠে নিয়ে যান। এরপর ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই পায়ের রগ কেটে দেন। এ সময় চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে আসামিরা পালিয়ে যান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিদের মধ্যে কথোপকথনে ময়না আক্তার শহিদুল ও নজরুলকে চিনতে পারেন। ঘটনার পরদিন এই নারীর বাবা ইমাম মৃধা শহিদুল ও নজরুলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় আদালত আসামিদের মোট দুটি অপরাধে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই নারীকে অপহরণের দায়ে প্রথমত প্রত্যেক আসামিকে ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যদিকে রগ কর্তনের দায়ে প্রত্যেক আসামিকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (বিশেষ পিপি) আবদুর রাজ্জাক খান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন। জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মক্কেলরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।