প্রথম আলোতে আসা সব সময় আনন্দের: বার্নিকাট
ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, প্রথম আলোতে আসাটা আমার কাছে সব সময় আনন্দের। কারণ আমি আপনাদের কাজের একজন জোরালো সমর্থক।
বার্নিকাট আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথম আলো কার্যালয় পরিদর্শনের সময় এ মন্তব্য করেন।
মার্শা বার্নিকাটকে স্বাগত জানান প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রগতি ইন্সুরেন্স ভবনে অবস্থিত দৈনিকের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখান তিনি। এরপর প্রথম আলোর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। সব শেষে তিনি প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, সহযোগী সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম ও আনিসুল হক, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, ফিচার সম্পাদক সুমনা শারমীন, উপ–সম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহসি, প্রধান বার্তা সম্পাদক শওকত হোসেন, বিদেশ সংস্করণের সম্পাদক সেলিম খান প্রমুখ।
প্রথম আলো কার্যালয় পরিদর্শনের প্রসঙ্গ টেনে মার্শা বার্নিকাট বলেন, আবারও প্রথম আলো কার্যালয়ে আসার নিমন্ত্রণের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এখানে আসাটা আমার জন্য সব সময় আনন্দের। কারণ বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আপনারা যে কাজটি করেন আমি এটির বড় ভক্ত।
বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনের সময় প্রথমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা আর এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে কাজ করতে হচ্ছে মার্শা বার্নিকাটকে। হোয়াইট হাউজে ক্ষমতার পালা বদল কোন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে তেমন কোন প্রভাব ফেলে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারত-মহাসাগরীয় কৌশলে (ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি) বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। আর এই কৌশলে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ওপর নতুন প্রশাসনের বেশ আগ্রহ রয়েছে।
বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে আবারও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্শা বার্নিকাট। এ নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিভিন্ন মন্ত্রীরাসহ সবাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান। আর গণতন্ত্রে সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকে অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের আর্থ–সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। মার্শা বার্নিকাট বলেন, ইতিহাসের ছাত্রী বলে নয়, বাংলাদেশে কাজ করতে এসে বুঝেছি, ইতিহাসের প্রতি এ দেশের বোধ খুব প্রখর। উন্নতির জন্য শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াসের প্রশংসা করতে হয়। তাঁর এ কৃতিত্ব শুধু নিজের পরিকল্পনাকে এগিয়ে নেওয়াতেই সীমিত নয়। তিনি তাঁর বাবার স্বপ্নকে পূর্ণতা দিচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
বাংলাদেশের অব্যাহত এগিয়ে চলার নিয়ামক হিসেবে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলে। তাই একে অন্যের ওপর নির্ভরশীলও বটে।
প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাতকারে সদ্য পাশ হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আবার উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। মার্শা বার্নিকাট বলেন, গত দুই বছর ধরে অনেক বন্ধুদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় এই আইন নিয়ে লিখিতভাবে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। সম্পাদকেরা যে সব বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, আমাদের এ বিষয়গুলোতে উদ্বেগ রয়েছে। গণতন্ত্রে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জগুলো জটিল। একদিকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হয়। আবার অন্যদিকে, জনসমক্ষে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে জনগণকে সুরক্ষা দিতে হয়।