একনেকে জাবি ও কুবিসহ ২০ হাজার কোটি টাকার ২১ প্রকল্প পাস

একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এনইসি সম্মেলনকক্ষ, ২৩ অক্টোবর। ছবি: ফোকাস বাংলা
একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এনইসি সম্মেলনকক্ষ, ২৩ অক্টোবর। ছবি: ফোকাস বাংলা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ২১টি প্রকল্প পাস হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়নে ৭৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প, ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে।

মঙ্গলবার একনেক সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

সূত্র বলছে, গত বছর অতিবৃষ্টির ফলে রাজধানীর দক্ষিণ অংশের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেসব ঠিক করতেই মূলত ডিসিসির এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ডিএসসিসি এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এই প্রকল্পের আওতায় ২৪৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ও মেরামত করা হবে। প্রায় ৫৯ কিলোমিটার ফুটপাত নতুন করে নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া প্রায় ২৪ কিলোমিটার ফুটপাত উন্নয়ন করা হবে। আবার ১৬৯ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণও করা হবে।

একনেকে সব মিলিয়ে ১৯ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকার মোট ২১টি প্রকল্প পাস হয়। এসব প্রকল্পে স্থানীয় মুদ্রায় দেওয়া হবে ১৭ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। আর বিদেশি সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ২৩৪ কোটি টাকা। সভা শেষে প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন; ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প; ৬২৫ কোটি টাকার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার পুনর্নির্মাণ; ৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকার ৩৫টি ড্রেজার ও সহায়ক জলযানসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ; ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকার দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন; ১৩০ কোটি টাকার বরিশাল শহরের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজিত নগর উন্নয়ন কর্মসূচি; ৪০৬ কোটি টাকার সৌর বেস স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে দুর্গম প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিটক নেটওয়ার্ক কভারেজ শক্তিশালী করা; ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ; ২৩৫ কোটি টাকার কেরানীহাট-বান্দরবান জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান, প্রশস্ততা ও উচ্চতায় উন্নীত করা; ১২৭ কোটি টাকার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; ১ হাজার ২৭০ কোটি টাকার সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম; ২৫০ কোটি টাকার পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সংযোগ সড়ক ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ; ৮৯ কোটি টাকার এস্টাবলিশমেন্ট অব থ্রি হ্যান্ডলুপ সার্ভিস সেন্টারস ইন ডিফারেন্ট লুম ইনটেনসিভ এরিয়া; ৬০ কোটি টাকার নরসিংদীতে বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের আধুনিকায়ন ও অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ; ৬৯০ কোটি টাকার বৃহত্তর ময়মনসিংহ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন; ৫৯২ কোটি টাকার গড়াই নদ ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ; ১১৭ কোটি টাকার চাঁদপুর সেচ প্রকল্পেও চর বাগাদী পাম্প হাউস ও হাজিমারা রেগুলেটর পুনর্বাসন; ৩২১ কোটি টাকার রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন; ১৬৩ কোটি টাকার মহিষ উন্নয়ন (২য় পর্যায়) এবং ৫৮৫ কোটি টাকার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কার্যক্রম জরুরি সহায়তা প্রকল্প।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমসটেক করিডর, সার্ক করিডরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হবে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে যেকোনো প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ নিশ্চিত করেই প্রকল্প নেওয়া হবে। ভূমি অধিগ্রহণ নিশ্চিত করা না হলে প্রকল্পে খরচ ও সময় বাড়ে।