জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কৃষককে হত্যার অভিযোগ

নিহত হালিমের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো
নিহত হালিমের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের ভাতরন্ড গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল হালিম শেখ (৪৫)। তিনি ভাতরন্ড গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভাতরন্ড গ্রামে এক দাগে ৫৫ শতক আবাদি জমি ছিল পাশের তেরশ্রী গ্রামের চন্দন ঠাকুরের। প্রায় এক বছর আগে তাঁর কাছ থেকে ওই জমির অর্ধেক অংশ (২৭ দশমিক ৫ শতক) কেনেন হালিম শেখ। বাকি অর্ধেক অংশ কেনেন হালিমের প্রতিবেশী জয়নাল হোসেন। ওই জমির মাঝামাঝি সীমানা নিয়ে অনেক দিন ধরে হালিমের সঙ্গে জয়নালের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গ্রামের কয়েকবার সালিস বৈঠক হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। আজ সকালে হালিম ওই জমিতে সেচের জন্য নালা (ড্রেন) কাটতে যান। বোরো ধান আবাদ করতে চেয়েছিলেন তিনি। সকাল সাতটার দিকে জয়নাল, তাঁর ছেলে হাবিবুর রহমান, চাচাতো ভাই আবদুর রশিদ, রশিদের স্ত্রী হাসনা বেগমসহ আরও চার-পাঁচজন লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই জমিতে যান। এরপর তাঁরা লাঠি দিয়ে হালিমকে পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা চলে যান। পরে হালিমকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিপুল বালো জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল।

ঘিওর থানা প্রাঙ্গণে গিয়ে নিহত হালিমের স্ত্রী শাহানাজ বেগম ও বড় ছেলে আবদুল আলিমকে আহাজারি করতে দেখা যায়। তিনি দাবি করেন, জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে জয়নাল, হাবিবুর, রশিদ ও হাসনা তাঁর স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করের। স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।

স্থানীয় পয়লা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, জমির সীমানা নিয়ে হালিম ও জয়নালের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে একাধিকবার সালিসে বসলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। আগামী মঙ্গলবার জমির বিরোধ নিয়ে আবারও সালিসে বসার কথা ছিল। তবে এর আগেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গেল।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। জয়নাল, রশিদ ও হাসনাকে আটক করা হয়েছে। হাবিবুর পলাতক।