জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার মাছ ও ফল চুরির মামলা
>• জাফরুল্লাহ চৌধুরী মাছ চুরি করেছেন, ফলও চুরি করেছেন
• তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, মারধর ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মাছ চুরি করেছেন, ফলও চুরি করেছেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, মারধর ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগে জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ঢাকার আশুলিয়া থানায় নতুন একটি মামলা হয়েছে।
কাজী মহিবুর রব নামে এক ব্যবসায়ী গত বুধবার রাতে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরও অন্তত ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে একই ধরনের অভিযোগে আরও চারটি মামলা করা হয় জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
মামলার বাদী কাজী মহিবুর রব মির্জানগর এলাকার দ্য কটন টেক্সটাইল মিলের চেয়ারম্যান। তিনি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, আশুলিয়ার পাথালিয়া মৌজায় ব্যবসায়ী কাজী মহিবুর রবের প্রায় ২০ একর জমি রয়েছে। ক্রয়সূত্রে তিনি ওই জমির মালিক হয়ে তা ভোগদখল করে আসছেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও সাইফুল ইসলাম সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই জমির ভোগদখলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। জমিতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলেও তাঁরা বাধা দিতেন। তাঁরা ওই জমিতে থাকা গাছের ফল ও পুকুরের মাছ চুরি করে নিয়ে যান।
মামলার বিবরণে আরও বলা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর দুপুরে ২০ থেকে ৩০ জন লোক নিয়ে সাইফুল ইসলাম ওই জমিতে যান। এর আগে থেকেই জমির মালিক কাজী মহিবুর রব তাঁর ঘনিষ্ঠ লুৎফর রহমান ও সাকিরুল কবিরকে নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। কথা বলার একপর্যায়ে সাইফুল ইসলাম শান্তিপূর্ণভাবে ওই জমি ভোগদখল করতে দেওয়ার বিনিময়ে তাঁর (কাজী মহিবুর রব) কাছে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। কাজী মহিবুর রব চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় সাইফুল ইসলামসহ অন্যরা তাঁকে মারধর করতে যান। এ সময় লুৎফর ও সাকিরুল এর প্রতিবাদ করলে তাঁরা (আসামিরা) তাঁদের মারধর করেন। পরে তাঁদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাঁরা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান।
চুরি, চাঁদা দাবি ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে এর আগে ১৫,১৯, ২১ ও ২৩ অক্টোবর জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা হয়েছে।
১৫ অক্টোবর মামলাটি করেন মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার মোহাম্মদ আলী ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আনিছুর রহমান। মামলায় তাঁরা জমি দখলের চেষ্টা, চুরি, ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির অভিযোগ করেন। ১৯ অক্টোবর আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের পক্ষে মামলা করেন তাঁর কেয়ারটেকার হাসান ইমাম। মামলায় তিনি জাফরুল্লাহসহ চারজনের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, চাঁদা দাবি ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করেন। এই দুই মামলায় গত রোববার হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ওই দিন রাতেই জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে চুরি, ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সৈয়দ সেলিম আহম্মেদ।
আর গত মঙ্গলবার জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন স্থানীয় নলাম গ্রামের নাসির উদ্দিন। মামলায় ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন ও চুরির অভিযোগ করেন তিনি।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর একজন কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করানো হয়। তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পর মামলা নথিভুক্ত করা হয়।
এর আগে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছিল। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো অনুষ্ঠানে একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই মামলা করা হয়েছিল। তিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আছেন।