আ.লীগকে হারানোর ক্ষমতা সুশীল-বিএনপির নেই: জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: বাসস
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ায় জনগণ তার সুফলও পেয়েছে। জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। অপরদিকে বিএনপি ক্ষমতায় এসে দেশকে ধ্বংস করেছিল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সকল প্রকার ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বর্তমান অবস্থায় এসেছে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার মতো ক্ষমতা সিভিল সোসাইটির সদস্য, বিএনপি এবং জামায়াতের নেই।

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সুচিন্তা ফাউন্ডেশন ‘২১ আগস্ট: বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান-ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারপারসন মোহাম্মদ এ আরাফাত।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জয় বলেন, ‘আমরা পরিবারের সদস্যদের হারানোর তীব্র যন্ত্রণা উপলব্ধি করি। সেকারণেই আমি রাজনীতিতে আসি এবং ২১ আগস্টের ভয়াবহ হামলার পর বিএনপি সরকারকে বিতাড়িত করি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ২১ আগস্টের ওই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় জড়িত ছিলেন। এই জঘন্য হামলার বিচার সম্পন্ন করতে দীর্ঘ ১৪ বছর লেগেছে।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেন, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও অন্যরা ১/১১-এর কুশীলব ছিলেন উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নেপথ্য নায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন মইনুল হোসেন। তারা এখন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে প্রধানমন্ত্রী বানানোর চেষ্টা করছেন।

জয় বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপি’র ন্যায় হত্যার রাজনীতি করে না। তিনি আরও বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মোট ২৪ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে। তা ছাড়া বিএনপি’র শাসনামলে আহসানউল্লাহ মাস্টার ও শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো নেতাকেও হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি আওয়ামী লীগের ন্যায় ১০ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতো, তবে কোনো আওয়ামী লীগ নেতা জীবিত থাকতো না।’

নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার প্রশ্নে বিএনপি নেতৃবৃন্দের অভিযোগের জবাবে জয় বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যারা আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সুশীল সমাজের সদস্যদের সমালোচনা করে জয় বলেন, যারা খুনি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে লজ্জাবোধ করে তারা আসলে খুনি ও সন্ত্রাসীদের রক্ষা করতে চায়।
নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিএনপি’কে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন বিচার কাজ সম্পন্ন করেছে উল্লেখ করে জয় বলেন, আওয়ামী লীগ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। নির্বাচনে যাদের একটি ভোটও সংগ্রহ করার ক্ষমতা নাই তাদের আওয়ামী লীগ ভয় পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তথাকথিত সুশীল সমাজের হুমকিকে পরোয়া করে না।

প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের কন্যা তানিয়া রহমান আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, দেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করাই ছিল ২১ আগস্ট হামলার মূল উদ্দেশ্য।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২১ আগস্টের হামলা এবং ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা ছিল একই সূত্রে গাঁথা। তারা বলেন, এসব ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে হত্যা করা এবং দেশকে একটি জঙ্গিবাদী দেশে পরিণত করা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির এবং সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু বক্তব্য দেন।