ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ইসলামী ব্যাংকের মুন্সিগঞ্জ শাখার প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকের স্মল বিজনেস ইনভেস্টমেন্ট স্কিমের (এসবিআইএস) সুপাভাইজার শহীদুল ইসলাম টিটুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার এ অভিযোগপত্র অনুমোদন করা হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, শিগগিরই বিচারিক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

দুদক সূত্র জানায়, জব্দ করা রেকর্ডপত্র, সংশ্লিষ্ট সাক্ষীদের জবানবন্দি ও আসামির লিখিত অঙ্গীকারনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, শহীদুল ইসলাম (টিটু) এসবিআইএস সুপারভাইজার হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের মুন্সিগঞ্জ শাখায় ২০০২ সাল থেকে কাজ করতেন। তাঁর দায়িত্ব ছিল গ্রাহক সংগ্রহ করা, গ্রাহকের বিনিয়োগের প্রস্তাব তৈরি করা, বিনিয়োগ মঞ্জুর হওয়ার পর পণ্য তাদের ক্রয় করে দেওয়া, বিনিয়োগের নথি সংরক্ষণ করা, সময়মত বিনিয়োগের টাকা সমন্বয় করাসহ সব তদারকি কাজ। শহীদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ৩৫০ জন গ্রাহকের ফাইল ছিল। ২০১৭ সালে শহীদুল ইসলাম একনাগাড়ে অনেক দিন অফিসে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর গ্রাহকদের বেশ কিছু হিসাব খেলাপি হয়ে যায়। তখন ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহীতাদের নোটিশ পাঠানো হলে তাঁর দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসে। 

তদন্তের সময় পাওয়া রেকর্ডপত্র এবং সাক্ষীদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, শহীদুল ইসলাম বিনিয়োগ স্থিতি সমন্বয় করার জন্য তাঁর কাছে জমা দেওয়া টাকা তিনি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট হিসাবে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। আবার গ্রাহকের নামে বিনিয়োগ মঞ্জুর করে পুরো টাকার পণ্য তাঁদের কিনে না দিয়ে জালিয়াতি করে টাকা কিংবা অনেক ক্ষেত্রে আংশিক টাকা নিজে ভোগ করেন। বিনিয়োগ নেওয়ার সময় প্রতারণা করে গ্রাহকদের দিয়ে অন্য কাগজে সই রেখে পরের বছর বিনিয়োগ নবায়ন করেন।
তদন্তে আরও দেখা যায়, অনেক গ্রাহক বিনিয়োগের জন্য আবেদন করলে শাখা প্রধান কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে গ্রাহককে দিয়ে একাধিক নথিতে স্বাক্ষর নিয়ে তাঁদের পরে যোগাযোগ করার কথা বলেন। পরে বিনিয়োগ অনুমোদন করে নিজেই ওই টাকা আত্মসাৎ করেন। এভাবে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে বিভিন্ন উপায়ে ৯২ জন গ্রাহকের ২ কোটি ৪০ লাখ ১৩ হাজার ৬৩৯ টাকা আত্মসাৎ করেন, যা সুদাসলে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৩ টাকা দাঁড়িয়েছে।
এ ঘটনায় গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ইসলামী ব্যাংকের মুন্সিগঞ্জ শাখার এভিপি ও শাখা প্রধান মো. সোলায়মান মামলা করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব আসে দুদকের কাছে। তদন্ত করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২–এর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম। একই কার্যালয়ের উপপরিচালক মোরশেদ আলম মামলার তদারককারী কর্মকর্তা ছিলেন।