কেন সংলাপে প্রধানমন্ত্রী, জানালেন আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: প্রথম আলো
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: প্রথম আলো

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সংলাপের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়েছেন। তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে গণতন্ত্র অর্জিত হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য সংবিধানসম্মত যেকোনো আলোচনার ব্যাপারে তাঁর দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। এতেই বোঝা যায় কোনো বৈদেশিক চাপে সংলাপ হচ্ছে না।

মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাঁদমারী এলাকায় জেলা রেজিস্ট্রার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মমর্যাদাশীল একজন ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশকে তিনি একটি মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। তিনি কোনো বিদেশি চাপে নত হওয়ার মতো মানুষ নন। তারপরও আমি বলব, বিদেশি কোনো চাপ ছিল না। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কোনো সমস্যা নেই, বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে চলছে। সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাংলাদেশে এই সরকার কোনো কিছুই করেনি এবং সংবিধানের ধারাবাহিকতা সংবিধানসম্মত যে কাজ আমরা সেই কাজ করে যাব।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সংবিধানে বলা আছে কোনো ব্যক্তির যদি নৈতিক স্খলনের জন্য দুই বছরের বেশি সাজা হয় তবে তিনি সাজা খাটার পরও আরও পাঁচ বছর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কিন্তু এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশে দুটি রায় আছে। একটি রায়ে বলা আছে, আপিল বিভাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত যদি সাজা স্থগিত করেন, তবে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। আরেকটি বিভক্ত রায় আছে, একজন বিচারক বলেছেন নির্বাচন করতে পারবেন, আরেকজন বলেছেন পারবেন না। তিনি বলেন, সব আইনের ঊর্ধ্বে হচ্ছে সংবিধান। আমার মনে হয় আদালতই সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না।

মঞ্চে বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব খাতে রেজিস্ট্রি অফিস প্রতিবছর কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করে সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে আসছে। কিন্তু এই রেজিস্ট্রি খাতকে অন্যান্য সরকার অবহেলা করেছে, এমনকি প্রাপ্ত মর্যাদাটুকু দেয়নি। তিনি বলেন, দলিল লেখকেরা টিনের বেড়ার ঘরে মাটিতে পাটি বিছিয়ে অনেক কষ্টে দলিল লিখে সম্পাদন করেছেন। রেজিস্ট্রি ভবন তো দূরের কথা নিজস্ব কোনো জমি ছিল না। নারায়ণগঞ্জ এর ব্যতিক্রম ছিল না। রেজিস্ট্রি অফিসের নিয়োজিত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে ছিল হতাশা। কিন্তু বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এসব প্রতিকূল অবস্থা থেকে দেশের রেজিস্ট্রি অফিস অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় সাবরেজিস্ট্রার বাংলাদেশ নিবন্ধন মহাপরিদর্শকের অফিসের মাধ্যমে সরকার এই খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধন করেছে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ নিবন্ধনের মহাপরিদর্শক ড. খান মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ হোসনে আরা বাবলী, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারসহ প্রমুখ।