ইয়াবা সেবন, ঢাবি ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৩

হলের কক্ষে ইয়াবা সেবনের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা ও এক কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কবি জসীমউদ্‌দীন হলে এই ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য বিদায়ী সহসম্পাদক শাহরিয়ার মাহমুদ রাজু, কবি জসীমউদ্‌দীন হল শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রমজান হোসাইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পি জে হার্টজ ইন্টারন্যাশনাল হলের মালি সুমন লাল দে৷ রাজু ও রমজান দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন৷

আটকের পর হল প্রশাসন তিনজনকেই শাহবাগ থানা-পুলিশে সোপর্দ করে। তবে আটক কর্মচারীকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে ।

হলসূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীমউদ্‌দীন হলের প্রাক্তন ছাত্র রমজান ও রাজু পিজে হার্টজ ইন্টারন্যাশনাল হলের কর্মচারী সুমন লালকে সঙ্গে নিয়ে হলের ৩২১ নম্বর কক্ষে বসে ইয়াবা সেবন করছিলেন৷ খবর পেয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. রহমতউল্লাহ ও কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তাঁদের ভেতরে রেখেই কক্ষ তালাবদ্ধ করে দিয়ে পুলিশকে খবর দেন৷ কিছুক্ষণ পরে শাহবাগ থানা-পুলিশ এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহযোগিতায় তাঁদের ওই কক্ষ থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

তিনজনকে আটক শেষে শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক সাহেব আলী সাংবাদিকদের বলেন, ওই কক্ষ থেকে একটি ব্যবহৃত মদের বোতল, একটি বিয়ারের বোতল ও আটক ব্যক্তিদের ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। হলের একাধিক সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিদায়ী সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল পাঠান সেতু আগে ৩২১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এখনো প্রায়ই রাতে হলে অবস্থান করলে তিনি এই কক্ষে থাকেন।

অধ্যাপক মো. রহমতউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তারা এই কক্ষটিতে আসা-যাওয়া করে বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। অথচ এদের কেউ হলের আবাসিক ছাত্র নয়। এই কক্ষটি ব্যবহার করে ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকের চালান হয় বলে আমরা জানতে পারি। আবাসিক ছাত্র না হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে তারা হলে অবস্থান করছিল। হলের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের তাদের দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছিল৷ সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই কক্ষটিতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। কক্ষটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আটক কর্মচারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ তবে দুই ছাত্র এখনো থানা হেফাজতে আছেন। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো মামলা হয়নি।’ আটক কর্মচারীকে কেন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি কোনো সদুত্তর দেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘যে দুই ছাত্র আটক হয়েছে, তাদের এখন আর ছাত্রত্ব নেই৷ কর্মচারীটিকেও থানায় সোপর্দ করা হয়েছে৷ থানা তাকে কেন ছেড়ে দিল, সে বিষয়ে আমি থানার সঙ্গে কথা বলছি৷’

তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর দাবি, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, তার কোনো ভিত্তি নেই৷ এর কোনো প্রমাণ তাঁরা পাননি৷ তাঁর ধারণা, এটি ষড়যন্ত্রও হতে পারে।