চার কোম্পানি পেল টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স

প্রথম অালো ফাইল ছবি
প্রথম অালো ফাইল ছবি

চারটি কোম্পানিকে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার অবকাঠামো ভাগাভাগি–সংক্রান্ত টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠান চারটির হাতে লাইসেন্স তুলে দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

যে চারটি প্রতিষ্ঠান টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স পেয়েছে সেগুলো হলো ইডটকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিডেট, সামিট পাওয়ার লিমিটেড, কীর্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড এবং এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেড।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় বিপুল ব্যয়ের পাশাপাশি টাওয়ারের অনিয়ন্ত্রিত সংখ্যা, ভূমি ও বিদ্যুতের সংকট ছাড়াও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবের বিভিন্ন দিক বিবেচনায় মানসম্মত টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এ লাইসেন্স দেওয়া হলো। এর ফলে মোবাইল টাওয়ার লাইসেন্স রোল আউটের ওপর ভিত্তি করে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো কোনো নতুন টাওয়ার স্থাপন করতে পারবে না। এ ছাড়া এক অপারেটর আরেক অপারেটরের কাছে আর টাওয়ার ভাড়া দিতে পারবে না। তবে লাইসেন্স পাওয়া টাওয়ার কোম্পানির কাছে তাদের টাওয়ার বিক্রি করতে পারবে।

লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম বছরে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের সব বিভাগীয় শহরে সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে। দ্বিতীয় বছর জেলা শহর, তৃতীয় বছর ৩০ শতাংশ উপজেলা, চতুর্থ বছর ৬০ শতাংশ উপজেলা ও পঞ্চম বছর দেশের সব উপজেলায় টাওয়ার সেবা দিতে হবে। টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্সের জন্য লাইসেন্স ফি ২৫ কোটি টাকা, বার্ষিক নবায়ন ফি ৫ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় বছর থেকে বিটিআরসির সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে। এ ছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে জমা দিতে হবে ১ শতাংশ হারে। লাইসেন্সের মেয়াদকাল ১৫ বছর।

লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, মোবাইল টাওয়ার শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে দেশে মোবাইল প্রযুক্তির বিকাশে আরও একটি নতুন মাইলফলক স্থাপিত হলো। টাওয়ার শেয়ারিং কার্যকর হলে টাওয়ারের জন্য মোবাইল অপারেটরসমূহকে (কোম্পানি) বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না বরং এর মাধ্যমে মোবাইলের মানসম্পন্ন ও উন্নত সেবা খাতে অপারেটরদের জন্য বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গুণগত মানের মোবাইল সেবা প্রদানে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক নেতৃত্বের যোগ্যতায় আজ উপনীত হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪-জি এবং এএপি চালু করা হয়েছে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মোবাইল এখন একটা প্রযুক্তিই নয়, এটি একটি ব্যক্তির পরিচিত হিসেবে চিহ্নিত। প্রযুক্তির নতুন ভার্সন ৫-জি ইতিমধ্যে আমরা পরীক্ষা শেষ করেছি। যার গতি হবে সেকেন্ডে ২০ জিবিপিএস। এর ফলে যন্ত্রের সঙ্গে যন্ত্রের কথা হবে। এ জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, টাওয়ার শেয়ারিং ও ৪–জি চালুর কার্যক্রম নিরন্তর প্রচেষ্টার ফসল। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতির ফলে এ খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে তিনি সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশপ্রেমের মহান ব্রত নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার চার প্রতিষ্ঠানের মালিকের হাতে লাইসেন্স তুলে দেন। ইডটকোর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির দেশীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহুল চৌধুরী, সামিট টাওয়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরিফ আল ইসলাম, এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান মোল্লা এবং কীর্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান করিম লাইসেন্স গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকও বক্তব্য দেন।