৪ কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক বদলি, একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের (সিজিএ) কার্যালয়ে অভিযানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের (সিজিএ) কার্যালয়ে অভিযানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না এবং পেনশন গ্রহীতাদের হয়রানি করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ পেয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের (সিজিএ) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযান চলাকালে দুর্নীতির অভিযোগে চার কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি এবং একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সোমবার সংস্থার সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। তাঁর সঙ্গে ছিল উপসহকারী পরিচালক আফনান জান্নাতসহ সংস্থার এনফোর্সমেন্ট বিভাগের একটি দল।

দুদক জানায়, সিজিএ অফিসে যেকোনো ধরনের বিল নিয়ে গেলে ঘুষ ছাড়া পাস করানো সম্ভব নয় মর্মে কমিশনের হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ আসে। অভিযোগে আরও বলা হয়, পেনশন গ্রহীতা এবং ঠিকাদারি বিল পরিশোধে ঘুষ চাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সিজিএ অফিসে অভিযান চালায় দুদকের দলটি।

অভিযানকালে দুদকের দলটি প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার (স্বরাষ্ট্র) কার্যালয়ের একজন সুপারসহ তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুই থেকে তিন মাস ফাইল আটকে রেখে পেনশন গ্রহীতাদের হয়রানির বিষয়ে নিশ্চিত হয়। অন্যদিকে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার (যুব ও ক্রীড়া) কার্যালয়ের এক অডিটরের বিরুদ্ধে একই অভিযোগের সত্যতা পায়।

এ প্রেক্ষাপটে দুদকের দলটির পরামর্শে তাৎক্ষণিকভাবে বদলির ব্যবস্থা নিয়েছে নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ। যাঁদের বদলি করা হয় তাঁরা হলেন পেনশন শাখার সুপার কাজী রমজান আলী, অডিটর সফিউল ইসলাম, জুনিয়র অডিটর মিজানুর রহমান ও অডিটর মোসাম্মত আনোয়ারা।

এ ছাড়া প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রশাসন ও পেনশন শাখার অডিট সুপার নুর ইসলাম কর্তৃক ২০ থেকে ২৫টি ফাইল দীর্ঘদিন আটকে রাখার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনে দুদকের দল। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপহিসাব মহানিয়ন্ত্রক (প্রশাসন) মো. মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন মো. শাখাওয়াত হোসেন ও মো. কামাল উদ্দিন।

অভিযান প্রসঙ্গে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘পেনশন বা যেকোনো বিল পাস করাতে ঘুষের অভিযোগ পীড়াদায়ক। এ জাতীয় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ফাঁদ পেতে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে। একই সঙ্গে ১০৬–এর মাধ্যমে অভিযোগ পেলে অভিযানও চালানো হবে।’