বল সরকারের কোর্টে, দায়িত্ব তাদেরই: ড. কামাল

সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বেইলি রোড, ঢাকা, ৭ নভেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম
সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বেইলি রোড, ঢাকা, ৭ নভেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম

নির্বাচনকালীন সরকার, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা নিয়ে আরও আলোচনা চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা সংলাপে এমন প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

এদিকে ঐক্যফ্রন্টের এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সংলাপ শেষে ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, ভবিষ্যতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হতে পারে।

সংলাপ শেষে বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় ব্রিফ করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ড. কামাল হোসেন লিখিত বক্তব্য পড়েন। সেখানে তিনি বলেন, সাত দফা নিয়ে সীমিত পরিসরে আলোচনা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার ও ভবিষ্যতে আর মামলা দায়ের না করা এবং নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার না করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা তো চেষ্টা করে যাচ্ছি যে একটা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে সবকিছু হোক। দায়িত্ব তো সরকারের, বল সরকারের কোর্টে।’

পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে আছি। কাল রাজশাহীতে সমাবেশ হবে। সংলাপ আমাদের আন্দোলনেরই অংশ। যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। সরকার যদি তা না চায়, তার দায়ভার তাদের। আমরা আমাদের দাবিগুলো নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি।’
দ্বিতীয় সংলাপে অর্জন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাওয়ার ব্যাপারটা রিলেটিভ। আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে সরকারের কাছে গিয়েছি। সরকার বলেছে, ভবিষ্যতে এগুলো নিয়ে তারা আলোচনা করে দেখতে পারে, সুযোগ আছে আলোচনার । সেটা তো থাকবেই। আমরা আমাদের দাবি নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি। ’

এ দফা সংলাপে সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘জনগণকে দিয়েই সন্তোষ আদায় করব।’
সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের দাবি সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার- কিন্তু সংবিধানে সে সুযোগ নেই এবং ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন পেছানোর বাহানা করছে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই কথা বলার অর্থ হচ্ছে, জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নাই। জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা নেই। নির্বাচন পেছানোর দাবি করছি, শুধু অর্থবহ নির্বাচনের জন্য। পেছানোর জন্য না, মানুষের দাবি নিয়ে এটা করছি।’

৮ তারিখ তফসিল ঘোষণা হলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা হবে। সরকার দাবি না মানলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করার চেষ্টা করার কথাও জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আইনিভাবে তা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা সংবিধানসম্মতভাবে সংসদ ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।