বদনাম ঘোচাতে বদির বিকল্প চান স্থানীয় নেতারা

আবদুর রহমান বদি
আবদুর রহমান বদি

ইয়াবার বদনাম ঘোচাতে বদির বিকল্প প্রার্থী চান দলীয় নেতা-কর্মী ও সচেতন মহল। উখিয়া-টেকনাফ (কক্সবাজার-৪) আসনের বর্তমান এই সাংসদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এর আগে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা করে সর্বসম্মতিক্রমে সাংসদ বদিকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাস করেছে।

সভার কার্যবিবরণী নিয়ে দু–এক দিনের মধ্যে ঢাকায় যাচ্ছেন আবদুর রহমান বদির বিপক্ষে অবস্থানকারী নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী আট–নয়জন নেতা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর ও জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর। তাঁদের মতে, বদির কারণে টেকনাফ ও উখিয়ায় ইয়াবার বিস্তার ঘটেছে। বদিসহ তাঁর নিকটাত্মীয় প্রায় ৩৫ জনের নাম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকায় রয়েছে। বদি ইয়াবা, মানব পাচার ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয়–প্রশ্রয়দাতা হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকাভুক্ত। এ কারণে এবার তাঁকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছে নিজ দল আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের করা ইয়াবার ৭৩ গডফাদারের তালিকায়ও বদির নাম রয়েছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ১৫ অক্টোবর সভা করে বদির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। এ প্রস্তাব নিয়ে আমরা মনোনয়নপ্রত্যাশীরা একসঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছি। উখিয়া–টেকনাফকে আমরা ইয়াবার কলঙ্কমুক্ত করতে চাই।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ এবং অপর সহসভাপতি জহির হোসেন ছাড়া অন্যরা আলী ও বশরের সঙ্গে রয়েছেন। দলীয় নেতারা মনে করেন, বদির কারণে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তিনি কখনোই ইয়াবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা–সমাবেশ করেননি।

>অভিযোগ নিয়ে ঢাকায় আসছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আট-নয়জন নেতা।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আবদুর রহমান বদিকে তাঁর দুটো মুঠোফোন নম্বরে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। সাংসদ বদি তাঁর ফেসবুক পেজে ৬৬ হাজার মানুষকে নিয়মিত চাল ও টাকা দেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁর অনুসারী উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বদিকে দলীয় নেতা-কর্মীরা না চাইলে কিছু যায় আসে না। তাঁকে জনগণ চায়।

সাংসদ ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন উল্লেখ করে জাফর আরও বলেন, ‘যে সভার কথা বলা হচ্ছে, তাতে আমি ছিলাম না। ইয়াবা ব্যবসার বিরুদ্ধে তিনি (সাংসদ) যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।’

বিরোধীপক্ষের নেতারা বদির ১০ বছরের সাংসদ থাকাকালীন বিভিন্ন অপকর্ম কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে মাদক ও মানব পাচার ছাড়াও তাঁর ঘর থেকে রোহিঙ্গা উদ্ধার, সরকারি–বেসরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতা-কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজনকে পেটানোর অভিযোগ আছে।

জানতে চাইলে অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বলেন, ‘দল কোনো মাদকসম্রাটকে মনোনয়ন দেবে বলে বিশ্বাস করি না। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে আমি মনোনয়নের বিষয়ে আশাবাদী।’