মইনুলকে উপযুক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা কেন নয়

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। ফাইল ছবি
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। ফাইল ছবি

রংপুর কারাগারে বন্দী সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেনকে ঢাকায় উপযুক্ত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।

মইনুল হোসনকে ঢাকায় বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দিতে নির্দেশনা চেয়ে তাঁর স্ত্রী সাজু হোসেন ৭ নভেম্বর রিটটি করেন। শুনানি নিয়ে পরদিন হাইকোর্ট মইনুল হোসেনের বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থা রাষ্ট্রপক্ষকে রোববারের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন আজ এসে পৌঁছে। এরপর আদালত রুল দেন।

আদালতে মইনুল হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মো. আবদুর রহিম ও এম মাসুদ রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।

পরে কাজী জিনাত হক প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেদনে এসেছে মইনুল হোসেনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আগে তিনি যেসব ওষুধ সেবন করতেন, তা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদনটি হলফনামা আকারে দাখিল করতে বলেছেন আদালত। 

আইনজীবী এম মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, কারা কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ও রংপুরের সিভিল সার্জনসহ আট বিবাদীকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ দিকে মানহানির অভিযোগে রংপুর ও জামালপুরে করা দুটি মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন মইনুল হোসেন। এর মধ্যে রংপুরে করা মামলা বাতিল আবেদনের ওপর আজ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাঁর সঙ্গে থাকা আইনজীবী এম মাসুদ রানা পরে প্রথম আলোকে বলেন, দুটি মামলা বাতিল চেয়ে গত বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি আবেদন করা হয়। রংপুরে মামলায় মইনুল হোসেনর জামিনও চাওয়া হয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশন চ্যানেলের একটি টক শোতে আলোচনার একপর্যায়ে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন মইনুল হোসেন। তাঁর এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২০টি মানহানির মামলা এবং অপর ২টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা। এর মধ্যে রংপুরে মানহানির অভিযোগে করা এক মামলায় ২২ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪ নভেম্বর তাঁকে রংপুরে নেওয়া হলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে তাঁর দিকে ইট, জুতা ও ডিম নিক্ষেপ করেন।