ভোট পেছাবে কি না, জানা যাবে সোমবার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ পেছাবে কি না, তা জানা যাবে সোমবার। ইতিমধ্যে বিএনপি, ২০–দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ভোট গ্রহণ পেছাতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে।

বিভিন্ন দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভোটের তারিখ নতুন করে নির্ধারণ হবে কি না, কিংবা তফসিল পুনর্নির্ধারণ হবে কি না, জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে কাল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম রংপুরে সাংবাদিকদের বলেন, তফসিল পোছানোর বিষয়ে কমিশন সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বর্তমান তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত।

তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম গণতান্ত্রিক জোট তফসিল ঘোষণা পেছানোর দাবি জানিয়েছিল। তফসিল ঘোষণার পর এখন তা পেছানোর দাবি করছে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

বিএনপির পক্ষ থেকে আজ রোববার বিকেলে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল এক মাস পিছিয়ে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি পাঠানো হয়। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ কয়েকজন এ চিঠি নিয়ে ইসিতে যান।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়, বিএনপি, ২০–দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে কমিশনের তফসিল ঘোষণা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এত কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করা সম্ভব না। তাই বিএনপি এ তফসিল এক মাস পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায়।

ভোট গ্রহণের তারিখসহ মনোনয়নপত্র জমা, যাচাইবাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের তারিখ পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় ইসিতে বি চৌধুরীর চিঠি নিয়ে যান বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক,  প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রউফ মান্নানসহ দলের আরও কয়েকজন।

বি চৌধুরীও তাঁর চিঠিতে বলেছেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী স্বল্প সময়ে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ, যাচাইবাছাই, সাক্ষাৎকার গ্রহণ ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন হবে। তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১৯ নভেম্বরের পরিবর্তে ২৬ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই ২২ নভেম্বরের পরিবর্তে ২৯ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ২৯ নভেম্বরের পরিবর্তে ৫ ডিসেম্বর করার কথা বলেছেন। অনুরূপভাবে ভোট গ্রহণের তারিখ ২৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৩০ ডিসেম্বর করার প্রস্তাব করেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। আজ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে। কমপক্ষে এক সপ্তাহের জন্য হলেও নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। তারা আগামীকাল সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি দিয়েছে।