এবার বাংলাদেশ বইমেলায় বিক্রি বেশি, বইপ্রেমীও বেশি

নৃত্য পরিবেশন করে পুষ্পকের শিল্পীরা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
নৃত্য পরিবেশন করে পুষ্পকের শিল্পীরা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কলকাতায় আয়োজিত বাংলাদেশের একক বইমেলা আজ রোববার শেষ হয়েছে। ২ নভেম্বর শুক্রবার থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছিল ১০ দিনব্যাপী এই বাংলাদেশ বইমেলা। এবারের মেলাও বসেছে কলকাতার রবীন্দ্র সদনের কাছে ঐতিহ্যবাহী মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। এই বইমেলা এবার ৮ বছরে পা দিয়েছে। বাংলাদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন বই নিয়ে বাংলাদেশের এই একক বইমেলার আয়োজন হয়ে আসছে ৮ বছর ধরে। 

এবারের বইমেলা প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও কলকাতা পৌর করপোরেশনের মেয়র পারিষদ দেবাশীষ কুমার। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী।

আজ রোববার কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছেন, এবারের বইমেলা বিগত বছরের তুলনায় বেশি জমেছে। বইপ্রেমীরা বেশি এসেছেন। বইও বিক্রি বেশি হয়েছে। বইপ্রেমীরাও এবার বাংলাদেশের বই কিনতে অনেকটা বেশি আগ্রহী হয়েছেন। বইও কিনেছেন। বইপ্রেমীরাও বলেছেন, বাংলাদেশের বইয়ের মান এখন অনেক উন্নত। ছাপা, বাঁধাই এবং দাম বইপ্রেমীদের আয়ত্তের মধ্যেই ছিল।
এবারের এই বইমেলা যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। বইমেলায় বাংলাদেশের ৬৯টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। গত বছর বইমেলায় বাংলাদেশের ৫১টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছিল।
বইমেলায় প্রতিদিন ছিল আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১০ দিনব্যাপী আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ ও কলকাতার বিশিষ্টজন ও শিল্পীরা। ৫ নভেম্বর বইমেলায় উদযাপিত হয়েছে শিশু দিবস।
আজ সমাপ্তি দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুজিবুর রহমান আলমামুন ও সরদার মো. কেরামত আলী, অধ্যাপক ইমানুল হক, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ এবং কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে মুর্শিদাবাদের ‘অন্য নিষাদ’ এবং ‘পুষ্পক’।
প্রতিদিন এই মেলা চলেছে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে শনি ও রোববার মেলা চলেছে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।

এবারের এই বইমেলায় বাংলাদেশের ৬৯টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, সাহিত্য প্রকাশ, মাওলা ব্রাদার্স, প্রথমা প্রকাশন, আগামী প্রকাশনী, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন, অন্যপ্রকাশ, শিখা প্রকাশনী, জার্নিম্যান বুকস, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, নওরোজ কিতাবিস্তান, রোদেলা প্রকাশনী, ঐতিহ্য, মূর্ধন্য, প্রতিভা প্রকাশ, পার্ল পাবলিকেশনস, কাকলি প্রকাশনী, অনন্যা, দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, দিব্য প্রকাশ, প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা, সময় প্রকাশন, সন্দেশ, বাংলা প্রকাশ, পাঞ্জেরী পাবলিকেশনস, অঙ্কুর প্রকাশনী, নবযুগ প্রকাশনী, শব্দশৈলী, বেঙ্গল পাবলিকেশনস, অনার্য পাবলিকেশনস, কথাপ্রকাশ, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, অক্ষর প্রকাশনী, আদর্শ, অনিন্দ্য প্রকাশ, দ্য ইউনিভার্সাল একাডেমি, অনুপম প্রকাশনী, পাঠক সমাবেশ, অন্বেষা প্রকাশন, চন্দ্রাবতী একাডেমি, ভাষাচিত্র,অন্যধারা, অঙ্কুর প্রকাশনী, আফসার ব্রাদার্স, আলেয়া বুক ডিপো, ইতি প্রকাশন, এ এইচ ডেভেলপমেন্ট পাবলিশিং হাউস, চারুলিপি প্রকাশন, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, ঝিনুক প্রকাশনী, তাম্রলিপি, দ্য রয়েল পাবলিশার্স, ধ্রুবপদ, নওরোজ সাহিত্য সম্ভার, নালন্দা, প্রান্ত প্রকাশন, বর্ণায়ন, বাতিঘর, বিদ্যাপ্রকাশ, বিশ্বসাহিত্য ভবন, মেরিট ফেয়ার প্রকাশন, যুক্ত, রিদম প্রকাশনা সংস্থা, র‌্যামন পাবলিশার্স, শিকড়, শোভা প্রকাশ, সৃজনী, সিসটেক পাবলিকেশনস প্রভৃতি।