নারীর প্রতি সমাজে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে: অ্যানি জাইদি

ভারতীয় কবি, লেখক ও চলচিত্র নির্মাতা অ্যানি জাইদি বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নারীদের জন্য মতপ্রকাশের ক্ষেত্র করে দিয়েছে। নারীর প্রতি সংহতি প্রকাশের ক্ষেত্রে সমাজে একধরনের পরিবর্তন চোখে পড়ে। 

আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক প্যানেল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও ঢাকা লিট ফেস্ট ‘আনবাউন্ড: সেলিব্রিটিং উইমেনস ভয়েসেস’ শীর্ষক ওই প্যানেল আলোচনার আয়োজন করে। আলোচনায় সঞ্চালনা করেন ইস্টওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ফখরুল আলম। আলোচনায় মূল দুই বক্তা ছিলেন ভারতীয় কবি, লেখক ও চলচিত্র নির্মাতা অ্যানি জাইদি এবং বাংলাদেশের লেখক ও ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজিয়া এস খান।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। ঢাকা লিট ফেস্টের শুরু থেকে ভারতীয় হাইকমিশনের যুক্ততার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সাহিত্যের নারীদের কণ্ঠের প্রতিফলন ঘটছে। শুধু সাহিত্যেই নয়, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব, রাজনীতিতে নারীর উপস্থিতি বাড়ছে বলে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা মন্তব্য করেন।

আলোচনার সূত্রপাত করতে গিয়ে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের স্ত্রী হেমাল শ্রিংলা তাঁর সাম্প্রতিক পঠনের অভিজ্ঞতা ও নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির প্রসঙ্গ টানেন। এরপর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার চার শিক্ষার্থী কবিতা পড়ে শোনায়।

নারীরা যা ভাবছেন স্বাধীনভাবে তা তাঁদের লেখায় তুলে ধরতে পারছেন কি না, ফখরুল আলম দুই আলোচকের কাছে এই প্রশ্ন করেন। অ্যানি জাইদি বলেন, এটা ঠিক যে নারী সাহিত্যিকদের অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসতে হয়েছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অন্তত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ নারী তাঁদের লেখা ও প্রকাশনা নিয়ে সন্তুষ্ট। এ প্রসঙ্গে রাজিয়া এস খান মন্তব্য করেন, নিঃসন্দেহে অনেক নারীই লেখালেখিতে এগিয়ে আসছেন। তাঁদের উপস্থিতিও অনেক দৃশ্যমান। তবে পুরোপুরি উদ্‌যাপনের পরিস্থিতি এখনো হয়নি।

#মি টু আন্দোলন, সমাজে মূল্যবোধের পরিবর্তন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অ্যানি জাইদি বলেন, নারীর প্রতি সংহতি প্রকাশের ক্ষেত্রে সমাজে একধরনের পরিবর্তন চোখে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নারীদের জন্য মতপ্রকাশের ক্ষেত্র করে দিয়েছে। এর ফলে সহমর্মিতা প্রকাশের ক্ষেত্রে এই মনোভাব সহজেই পরিলক্ষিত হয়। নারী এখন ঋজুভাবে বলতে পারছেন, ভুলটা আপনি করেছেন, আমি নই।
একজন লেখক কী শুধু তাঁর অন্তর্গত জগতের অনুভূতিই লেখায় তুলে ধরেন? ফখরুল আলমের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অ্যানি জাইদি বলেন, সব সময় নয়। বিশেষ করে ভারতে প্রকাশ্যে নারীদের হয়রানি নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে, তা সাহিত্যিকেরা তাঁদের লেখায় তুলে ধরেছেন। চলতি বছর দ্য হিন্দু প্লেরাইট অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী অ্যানি জাইদি মনে করেন, নারীকে শুধু একজন সাহিত্যিক হিসেবে দৃশ্যমান হলেই চলবে না। একজন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর চারপাশে যা কিছু ঘটছে, এটি নিয়েও তাঁকে কথা বলতে হবে। নিজের মত তুল ধরতে হবে।