পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের ১৬ আবাসন কোম্পানির ভরাট কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা

পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকায় থাকা ১৬টি আবাসন কোম্পানির নিচু জমি, জলাশয় দখল ও ভরাট কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে দুই মাসের মধ্যে বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ওই এলাকায় ১৬টি আবাসন কোম্পানির জলাশয়, পুকুর, নিচু ভূমি ভরাট ও দখল এবং বিভিন্ন কোম্পানির সাইনবোর্ড স্থাপন বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ গত ২১ অক্টোবর রিটটি করে।

রিট থেকে জানা যায়, ১৬টি আবাসন কোম্পানি হচ্ছে প্লাটিনাম পূর্বাচল সিটি, সিটি ক্লাউড, কানাডা সিটি, জমিদার সিটি, ড্রিমল্যান্ড, হোমল্যান্ড পূর্বাচল সিটি, হোম টাউন পূর্বাচল সিটি, প্রিটি রিয়েল এস্টেট, মাসকট গ্রীণ সিটি, রিমঝিম, পুষ্পিতা এমপিয়ার হাউজিং, নন্দন সিটি, বেস্টওয়ে সিটি, মালুম সিটি, মেরিন সিটি ও সোপান সিটি।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী শর্মা ও পূরবী সাহা।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনের বিধান অনুসারে কোনো এলাকার জলাভূমি, জলাশয়, পুকুর দখল ও ভরাট সম্পূর্ণ নিষেধ। এরপরও রূপগঞ্জ ও কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে জলাশয়, জলাভূমি, নিচু ভূমি ও পুকুর ভরাট করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির সাইনবোর্ড স্থাপনের কাজ চলছে। ওই ১৬টি আবাসন কোম্পানি ইতিমধ্যে মাটি ভরাট করে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, ফলে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

রিট আবেদনকারীপক্ষের এই আইনজীবী আরও বলেন, ২০১৫,২০১৬ ও ২০১৭ সালের এরিয়েল ম্যাপ (গুগল অথবা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ম্যাপ) সংগ্রহ করে পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্প এলাকায় থাকা রূপগঞ্জ ও কালীগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকার জলাশয়, জলাভূমি, নিচু ভূমি ও পুকুর ইত্যাদি চিহ্নিত করে ছয় মাসের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে পরিবেশসচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব এবং ভূমিসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রুলে রূপগঞ্জ ও কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে জলাশয়, জলাভূমি, নিচু ভূমি ও পুকুর ভরাট ও বিভিন্ন কোম্পানির সাইনবোর্ড স্থাপন বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই সব জলাশয়, জলাভূমি, নিচু ভূমি ও পুকুর রক্ষায় কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। পরিবেশসচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব, ভূমিসচিব, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।