১৫ নভেম্বর প্রথম দলের রোহিঙ্গাদের রাখাইনে পাঠাতে প্রস্তুত দুই দেশ

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১৫ নভেম্বর থেকে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে টেকনাফের কেরুনতলী ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে পৃথক দুটি অন্তর্বর্তীকালীন শিবির তৈরি করা হয়েছে। নাফ নদীর মাধ্যমে নৌ সীমান্ত দিয়ে প্রথম দফায় রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ।

রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে ১৫ নভেম্বর থেকে নেওয়া শুরু করতে মিয়ানমার যে তৈরি আছে সেটি উল্লেখ করে দেশটি সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি কূটনৈতিকপত্র দিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন ও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমার তৈরি আছে। আগামী ১৫ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) থেকে তাদের প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু হবে। তিনি জানান, প্রথম দলে ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা ফেরত যাবে। প্রতিদিন দেড়শ করে ১৫ দিনে এসব রোহিঙ্গা দেশে ফিরবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চলতে থাকবে।
প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিটির আহবায়ক, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সিন্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য প্রস্তুতি চলছে। ওই দিনটিকে মাথায় রেখে এরই মধ্যে টেকনাফের কেরুনতলীতে একটি ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন শিবির তৈরি করা হয়েছে। প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য ৪৮৫ পরিবারে ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে ঠিক করা হলেও মিয়ানমার প্রতিদিন দেড় শ’ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে চায়।
রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দুই দেশ তাদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত থাকার কথা বললেও মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানেরা তাদের আদি নিবাসে ফেরার ব্যাপারে কিছুই জানেন না। উখিয়ার তিনটি আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জোর করে তাদের রাখাইনে ফেরত পাঠালে পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারে বলে মনে করছে রোহিঙ্গারা।

গত ৩০ অক্টোবর ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানের কথা জানান। ওই সময় মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মন্ট সোয়ে বলেন, ‘আমাদের দুইপক্ষেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে এবং আমরা দুই পক্ষই দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই।’

গত বছরের ২৫ আগষ্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা শুরু হলে এরপর থেকে পরের কয়েক মাসে প্রাণ বাঁচাতে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।