ইডেনের ছাত্রী মিতা হত্যা মামলায় সবাই খালাস

আট বছর আগে রাজধানীর ইডেন কলেজের ছাত্রী সাদিয়া নূর মিতা হত্যায় করা মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনসহ দণ্ডিত আটজন খালাস পেয়েছেন।

বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন। বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসা ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে এই রায় দেওয়া হয়।

ওই মামলায় ২০১৩ সালের ১২ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক রায় দেন। রায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড, চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একজনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন মিতার ফুফাতো ভাই খন্দকার মামুন হাসান, খন্দকার হাসিবুর রহমান ওরফে নিপুণ এবং মফিজ খন্দকার ওরফে দগু। যাবজ্জীবন সাজা হয় কাজী শাহ আলম ওরফে তুষার কাজী, শামসুর রহমান ওরফে জনি, শেখ নাজমুল ও নিহত মিতার চাচাতো বোন ইসরাত জাহান শ্রাবণীর। আর বিচারিক আদালতের রায়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয় আনোয়ার হোসেন ওরফে মনির।

ওই রায়ের পর তিন আসামির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। আর দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আটজন পৃথক আপিল করেন। এসবের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়। আজ ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও আপিল মঞ্জুর করে রায় দেওয়া হয়।

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ ও এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল।

মনিরুজ্জামান রুবেল প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় করা মামলায় কোনো চাক্ষুষ সাক্ষী ছিলেন না। একজনসহ আসামির নিজেকে না জড়িয়ে অন্যদের জড়িয়ে তাঁর দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য বিবেচনা করে বিচারিক আদালত রায় দেন। এটি আইনগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য মনে না হওয়ায় হাইকোর্ট আটজনের সবাইকে খালাস দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। আটজনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন কারাগারে এবং অন্য পাঁচজন জামিনে আছেন।

২০১০ সালের ২৪ আগস্ট ঈদ উপলক্ষে কলেজ ছুটির পর মিতা (চতুর্থ বর্ষের) পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মিয়াপাড়ায় যান। ৩০ আগস্ট রাতে মিতা নিখোজ হন, পরদিন বাড়ির পাশের একটি পুকুরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মিতার বাবা লিয়াকত হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে সেদিনই গোপালগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এই মামলায় ২০১১ সালের ২৯ মে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় বিচারিক আদালতের রায়ে জসিমুল ইসলাম ওরফে জগলু ও মাসুম বিল্লাহ বেকসুর খালাস পান।