আমানুর বাদ, প্রার্থী হতে পারেন বাবা

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সরকারদলীয় সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাকে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। সাংসদের বাবা আতাউর রহমান খান এ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন বলে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র আভাস দিয়েছে।

আমানুর রহমান ২৬ মাস ধরে কারাগারে আছেন। ফারুক হত্যা মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে। এই মামলায় আমানুরের অপর তিন ভাইও আসামি হয়ে পলাতক আছেন। তাঁদের বাবা আতাউর রহমান সোনালী ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ছিলেন। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

আতাউর রহমানের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনায় বর্তমান সাংসদ আমানুরের সমর্থকেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে ফারুক হত্যার বিচারের দাবিতে সক্রিয় থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেন, প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে নানা মাধ্যমে মনোনয়ন বোর্ডের আলোচনা স্থানীয় নেতারা হয়তো জেনেছেন। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত কোনো খবরই চূড়ান্ত নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের চার নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ফারুক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা চার বছর ধরে টাঙ্গাইলছাড়া হয়েছেন। একসময় টাঙ্গাইলে তাঁদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল। সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ব্যবসা–বাণিজ্য, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করত এই ‘খান পরিবার’। এখন ছেলের পরিবর্তে বাবার মনোনয়ন পাওয়ার মধ্য দিয়ে এই পরিবারের আবার টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলো।

নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী শহিদুল ইসলাম বলেন, আতাউর রহমান খানের মনোনয়নের সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলে তা সঠিক হয়নি। এতে তৃণমূলের মতামত প্রতিফলিত হবে না।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এই হত্যায় সাংসদ আমানুর রহমান খান ও তাঁর ভাইদের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এ মামলায় আমানুর ছাড়াও তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খানকে আসামি করা হয়।