পরিপত্রে সেনাবাহিনীর কর্তব্যের বিস্তারিত থাকবে: কবিতা খানম

>কবিতা খানম দেশের প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার। ১৮ নভেম্বর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন মিজানুর রহমান খানের। ৭ প্রশ্নের জবাবে জানিয়ে দিলেন আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত অনেক বিষয়।
কবিতা খানম। প্রথম অালো ফাইল ছবি
কবিতা খানম। প্রথম অালো ফাইল ছবি

প্রথম আলো: প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী পেলেন না কেন? 
কবিতা খানম: যেসব ক্ষেত্রে অরাজনৈতিক বিষয়ে থাকে, সেসব ক্ষেত্রে অনুমতি চাওয়া হয় এবং নির্বাচন কমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়ে থাকে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে আমরা প্রথমে অনাপত্তিপত্র দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। কোনো মন্ত্রী প্রার্থী হচ্ছেন কি না, অনাপত্তিপত্র নেওয়ার বিষয়টি তার ওপরে নির্ভর করে।

প্রথম আলো: ইত্তেফাকে একটা রিপোর্ট এসেছে যে নাশকতা ঠেকাতে প্রতি জেলায় একজন করে সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সরকার আপনাদের পাশ কাটাতে পারে? এতে আপনাদের সম্মতি আছে বা থাকবে?
কবিতা খানম: বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। আপনি পত্রিকার রিপোর্টের কথা বলছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না বিষয়টি কমিশনের কাছে আসছে, ততক্ষণ আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।

প্রথম আলো: একমাত্র নারী কমিশনার হিসেবে আসন্ন নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণকে কীভাবে দেখছেন?
কবিতা খানম: অনেক নারী এবারে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের ব্যাপারে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই। এটা নিশ্চয় উৎসাহব্যঞ্জক। নির্বাচনে নারীর অধিকতর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আমি স্বাগত জানাই। সব ক্ষেত্রেই যখন পুরুষদের সঙ্গে সমমর্যাদা রেখে মেধা দিয়ে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে নারীরা যদি নির্বাচনেও সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এগিয়ে আসতে পারেন, তাহলে নারীর জন্য সেটা গৌরবের। সেটা একটা বড় ধরনের অগ্রগতি বলে গণ্য হবে।

প্রথম আলো: বিএনপি দলের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তালিকা আপনাদের দিয়েছে। আপনারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
কবিতা খানম: আমি এখনো এ-সংক্রান্ত নথি দেখিনি। তবে এটা জেনেছি যে তারা ইসিতে এ বিষয়ে তথ্যাদি জমা দিয়েছেন। ইসিতে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বৈঠক হয়নি। যত দূর জানি, কমিশন এখন এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেটা নির্ধারণ করবে।

প্রথম আলো: নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান বা বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার মতো একটা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এবারে কি তা হচ্ছে?
কবিতা খানম: এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। সরকারের কাছে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা যাবে।

প্রথম আলো: সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে। কিন্তু এবারে তারা কোন অবস্থানে থেকে কীভাবে কোথায় দায়িত্ব পালন করবে, তা মানুষের কাছে স্পষ্ট নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাঁর সাম্প্রতিক ভাষণে সেনা মোতায়েনের ফৌজদারি কার্যবিধির আওতায় ‘ইন এইড অব সিভিল পাওয়ার’ কথাটি ব্যবহার করেছেন। কিন্তু তাতে কিছুই বোঝা যায় না।
কবিতা খানম: বিষয়টি পরিষ্কার করা হবে। ইসির সভায় এ বিষয় আলোচনা করে আমরা পরিষ্কার করব। আগের মতোই এ ব্যাপারে যথারীতি একটি পরিপত্র জারি করা হবে। তারা কোথায়, কীভাবে ডিউটি করবে, তাতে তা নির্দিষ্ট থাকবে।

প্রথম আলো: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কি আগের মতোই নিয়োগ করা হবে? নাকি এবারে কোনো নতুনত্ব থাকছে? ভোটকেন্দ্রের অনুপাতে সেনাসদস্যসংখ্যা কত হতে পারে?
কবিতা খানম: নির্বাচনী দায়িত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা কত হবে, তা এখনো ঠিক করা হয়নি। আমরা এটা অবস্থা মূল্যায়ন করে নির্ধারণ করব। নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। কিন্তু কী পর্যায়ে মোতায়েন করা হবে, তা নিয়ে কমিশন আবার বৈঠকে বসবে। আর সব নির্বাচনের মতো বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তো থাকবেনই।