জাতীয় পার্টি এখনো দর-কষাকষিতে

>
  • জাপা ৭০ জনের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে
  • আওয়ামী লীগ ৪০ টির বেশি আসন দিতে চাইছে না
  • উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাপায় মনোনয়ন নিয়ে অস্থিরতা

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনো দর-কষাকষি চলছে এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টির (জাপা)। দলটির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, তারা ৭০ জনের একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে, কিন্তু ৪০-৪২ টির বেশি আসন দিতে চাইছে না আওয়ামী লীগ। এ অবস্থায় জাপায় মনোনয়ন নিয়ে অস্থিরতা বাড়ছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের একটি মিলনায়তনে জাপার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু এরশাদ কারও সাক্ষাৎকার নেননি। তিনি ৩০০ আসনেই প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার ঘোষণা দেন এবং নেতা-কর্মীদের তাঁর ওপর ভরসা রাখার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন। তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, দু–তিনজন ছাড়া দলের বর্তমান সাংসদদের অধিকাংশই এবার মনোনয়ন পাবেন।

দলের দায়িত্বশীল নেতারা জানান, এবার জাপার চেয়ারম্যান এরশাদ ও কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এরশাদ রংপুর-৩, ঢাকা-১৭ আসনে ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে সংসদ নির্বাচন করতে চান। আর জি এম কাদের লালমনিরহাট-৩ ও ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী। তবে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে তাঁকে লালমনিরহাটে নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। সরকারি দলের একটি সূত্র জানায়, এরশাদকে ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) ও নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের যেকোনো একটি বেছে নিতে বলা হয়েছে। এই আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের গোলাম দস্তগীর গাজী। এ অবস্থায় এরশাদ কী করবেন, সে সিদ্ধান্ত নেননি বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।

জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকা
জাপার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সাংসদদের অধিকাংশ এবারও দলীয় মনোনয়ন পাবেন। মহাজোটের মনোনয়নের তালিকায়ও তাঁদের নাম আছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রংপুর-১ আসনে মসিউর রহমান, রংপুর-৩ আসনে এইচ এম এরশাদ, কুড়িগ্রাম-১ আসনে এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে আক্কাস আলী, গাইবান্ধা-১ আসনে শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গাইবান্ধা-৩ আসনে দিলারা খন্দকার, লালমনিরহাট-৩ আসনে জি এম কাদের, বগুড়া-২ আসনে শরীফুল ইসলাম, বগুড়া-৩ আসনে নুরুল ইসলাম তালুকদার, বগুড়া-৬ আসনে নুরুল ইসলাম ওমর, বগুড়া-৭ আসনে আলতাফ আলী, পটুয়াখালী-১ আসনে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, বরিশাল-৬ আসনে নাসরিন জাহান, জামালপুর-৪ আসনে মামুনুর রশীদ, ময়মনসিংহ-৪ আসনে রওশন এরশাদ, ময়মনসিংহ-৫ আসনে সালাউদ্দীন আহম্মেদ, ময়মনসিংহ-৮ আসনে ফখরুল ইমাম, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে মুজিবুল হক, ঢাকা-১ আসনে সালমা ইসলাম, ঢাকা-৪ আসনে সৈয়দ আবু হোসেন, ঢাকা-৬ আসনে কাজী ফিরোজ রশীদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে লিয়াকত হোসেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সেলিম ওসমান, সিলেট-২ আসনে ইয়াহইয়া চৌধুরী, সিলেট-৫ আসনে সেলিম উদ্দিন, হবিগঞ্জ-১ আসনে আবদুল মুনিম চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জিয়াউল হক মৃধা, কুমিল্লা-২ আসনে আমির হোসেন, কুমিল্লা-৮ আসনে নুরুল ইসলাম, ফেনী-৩ আসনে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে মোহাম্মদ নোমান, চট্টগ্রাম-৫ আসনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৯ আসনে জিয়াউদ্দিন আহমেদ উল্লেখযোগ্য।

জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা সন্তোষজনকভাবে এগোচ্ছে। উভয়ের স্বার্থ রক্ষা করে আমরা সম্মানজক আসন পাব।’