আওয়ামী লীগের মনোনয়নের তালিকা থেকে মাদারীপুর-৩ আসনের সাংসদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের বাদ পড়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এলাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে। তাঁদের অনেকেই বলছেন, এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। তাঁর পাশাপাশি সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের নামও উচ্চারিত হচ্ছে।
কালকিনি ও সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে মাদারীপুর-৩ আসন গঠিত। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। এর আগে টানা চারবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আবুল হোসেন। বাহাউদ্দিন গত কয়েক বছর নির্বাচনী এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেছেন। জনসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। তবে আবুল হোসেন এলাকায় তেমন আসেননি। সবশেষ ছয় মাস আগে একবার তিনি এসেছিলেন। তবে তাঁর সমর্থক নেতা-কর্মীরা নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন।
এদিকে, গত রোববার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকা থেকে বাহাউদ্দিন বাদ পড়ছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর আবদুস সোবহানের নাম উঠে এসেছে। তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতা। তবে এলাকায় তাঁর তেমন উপস্থিতি নেই, কর্মী-সমর্থকও কম।
এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিনা সিদ্দিকী বলেন, ‘বাহাউদ্দিন নাছিম গত পাঁচ বছরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি মাঠ-ঘাট ও পাড়া-মহল্লা চষে বেড়িয়েছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নবার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁকে মনোনয়ন না দিলে তৃণমূলে চরম হতাশা দেখা দেবে।’
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক ব্যাপারী বলেন, কালকিনির ৯৯ শতাংশ মানুষ আবুল হোসেনকে চান। কিন্তু এখন আবদুস সোবহানের কথা শুনছি। তিনি বিচ্ছিন্ন নেতা। তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মী বা সমর্থকদের কোনো যোগাযোগ বা সম্পর্ক নেই। এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এই আসনের ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। এমনকি বিএনপির দখলে যেতে পারে এই আসন।’
এ বিষয়ে জানতে আবদুস সোবহানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। তাঁর সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল হক সরদার বলেন, কালকিনিতে আবুল ও নাছিমের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তবে গোলাপের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। তিনি (গোলাপ) নিজেকে এই আসনে যোগ্য প্রার্থী মনে করেন। দল যদি তাঁকে মনোনয়ন দেয়, তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে গোলাপের কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁকে মনোনয়ন না দিতে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের কথা জানাব।’