বিএনপির মনোনয়ন-যুদ্ধেও সেই দুপক্ষ

নাসিরুল হক ও হারুন অর রশিদ
নাসিরুল হক ও হারুন অর রশিদ

রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রায় প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে কমিটি রয়েছে দুটি করে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও পৃথকভাবে পালন করা হয়। মনোনয়নযুদ্ধেও এর প্রভাব স্পষ্ট। এই আসনে বিএনপির সাতজন মনোনয়ন ফরম জমা দিলেও প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ নাসিরুল হক সাবু ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ।

পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলা নিয়ে রাজবাড়ী-২ আসন গঠিত। নাসিরুল হক ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। দলের নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ। এ দুজন ছাড়াও এবার মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন কালুখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপির সহসভাপতি গোলাম শওকত সিরাজ, পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শাহ্ মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি লুৎফর রহমান ও সৌদিপ্রবাসী তৌফিক এলাহী। এর মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে প্রচার চালিয়েছেন নাছিরুল হক, হারুন অর রশিদ ও আবদুর রাজ্জাক। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় কেন্দ্র থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।

দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাসিরুল হক, আবদুর রাজ্জাক ও তৌফিক এলাহী মূলত একপক্ষে রয়েছেন। অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হারুন অর রশিদ। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাসিরুল হক, আবদুর রাজ্জাক ও তৌফিক এলাহী কবির একপক্ষ। অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নেতৃত্ব দেন হারুন অর রশিদ। এখানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে আলাদাভাবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও পৃথকভাবে পালন করা হয়।

পাট্টা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শাহ্ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাংসদ হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার যোগ্যতা আমার রয়েছে। দলের তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে হারুন ভাইয়ের সঙ্গে রয়েছি। তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।’

এ সম্পর্কে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ছাত্রদলের মাধ্যমে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু। ধারাবাহিকভাবে কমিটিতে বিভিন্ন দায়িত্ব শেষে দুবার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রাজপথে থেকেছি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সাংসদ হিসেবে আমাকে দেখতে চান। আমিও বিশ্বাস করি দল মনোনয়ন দিলে আমি বিজয়ী হব। তবে অন্যদের মনোনয়ন দিলেও ধানের শীষের পক্ষে কাজ করব।’

দলের জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন কমিটি পর্যন্ত বিভেদের কথা স্বীকার করে নাসিরুল হক বলেন, ‘বড় দলে বিভেদ থাকবেই। তবে বিভেদ আর বেশি দিন থাকবে না। ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংসদ হিসেবে দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি। যোগ্য প্রার্থী হিসেবে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’