আ.লীগে এবারও লাঙ্গলভীতি

বগুড়া–৩ (আদমদীঘি–দুপচাঁচিয়া) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের এক ডজন নেতা। ২০১৪ সালের ‘একতরফা’ নির্বাচনে আসনটি জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ, যাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন একেবারে অপরিচিত মুখ নুরুল ইসলাম। এবার তিনিসহ দুজন জাপা থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এখন পর্যন্ত জাপার সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে লাঙ্গলভীতি। শেষ পর্যন্ত কে মনোনয়ন পাবেন, তা নিয়েই চলছে তদবির ও হিসাব–নিকাশ।

দুই উপজেলার মধ্যে আদমদীঘিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা বেশ ভালো। ফলে মনোনয়নপ্রত্যাশী ১২ জনের ১০ জনই এই উপজেলার। জাপা থেকে বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলামের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন শামসুর রহমান।

২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী আবদুল মোমিন তালুকদার ১ লাখ ৪ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম মওলা ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনছার আলী মৃধা মিলে পান প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার ভোট। ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে ভোট বেশি থাকায় আসনটিকে সম্ভাবনাময় ভাবছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কেউ নিশ্চিত নন এ আসনে তাঁরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন। গত পাঁচ বছর এ আসনে জাতীয় পার্টির সাংসদ থাকলেও দুই উপজেলার পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। এলাকার ভোটাররা মনে করেন, যদি এই আসন আগের বারের মতো জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে বিএনপির প্রার্থীকে জয়ী হতে কোনো বেগ পেতে হবে না।

আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নসরুল হামিদ বলেন, ‘আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য সম্ভাবনাময়। কিন্তু প্রতিবারই মনোনয়ন–সংক্রান্ত জটিলতায় আসনটি হারাতে হয়। এবারও যদি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না দেয়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী ঘুমিয়ে নির্বাচন করলেও জয়ী হবেন। আওয়ামী লীগ থেকে সঠিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে আওয়ামী লীগ বড় ব্যবধানে জয় লাভ করবে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। তবে যদি কেন্দ্র মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে কোনো কারণে ভুল করে, তাহলে আমাদের কষ্ট পাওয়া ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।’