সাতক্ষীরায় চারটি আসনেই লড়তে চায় জামায়াত

সাতক্ষীরার চারটি আসনেই জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও একটিতে ২০-দলীয় জোটের নামে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে।

দলটির একজন নেতা জানান, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তাঁরা দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারছেন না। সাতক্ষীরা জেলায় দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের সাংগঠনিক শক্ত ভিত রয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে জেলার তিনটি আসন তাঁদের দখলে ছিল। অন্য দুটি আসনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হলেও মূলত জামায়াতে ইসলামীর ভোটে তাঁরা জয়লাভ করেন। ২০০৮ সালে সাতক্ষীরার একটি আসন কমিয়ে চারটি করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাঁদের প্রার্থীরা পরাজিত হলেও ভোটের ব্যবধান তেমন ছিল না। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তাঁরা এবারও চারটি আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে জেলা জামায়াতের আমির মো. আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি, দেবহাটা ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. রবিউল বাসার ও সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনে জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য সাবেক সাংসদ জি এম নজরুল ইসলামের নামে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ আসনে বিএনপি ও অন্য তিনটি আসনে জামায়াতের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাতক্ষীরা-২ আসনে মহাজোটের প্রার্থী এম এ জব্বারের কাছে জামায়াতের প্রার্থী মো. আবদুল খালেক মণ্ডল ১৮ হাজার ৮৬৪ ভোটে পরাজিত হন। এবার এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবদুল খালেক অনেক জনপ্রিয় প্রার্থী। অন্য যেকোনো দলের প্রার্থীর চেয়ে তার জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি।

২০০৮ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আফম রুহুল হকের কাছে ৮ হাজার ৮৫৮ ভোটে পরাজিত হন জামায়াতের প্রার্থী এম এ রিয়াছাত আলী। এবার এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছেন দলটির মো. রবিউল বাসার। তিনি নতুন হলেও তাঁর সঙ্গে যেকোনো প্রার্থীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার আশা করছেন নেতা-কর্মীরা।

সাতক্ষীরা-৪ আসনে ওই নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এইচ এম গোলাম রেজার কাছে জামায়াতের প্রার্থী জি এম নজরুল ইসলাম ৩৩ হাজার ৭৫৮ ভোটে পরাজিত হন। নজরুল ইসলাম এলাকায় জনপ্রিয় মানুষ। এবারও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ফলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশা করছে দলটি।

জামায়াতের অপর একজন নেতা বলেন, তাঁরা ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য সাংগঠনিক কাজ আগে থেকেই শুরু করেছেন। জামায়াতের নারী কর্মীরা আগে থেকে মাঠে রয়েছেন। তাঁরা বৈঠক ছাড়াও তাঁদের অবস্থান জামায়াতের কর্মী–সমর্থকদের অবগত করেছেন।

যোগাযোগ করলে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াত নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভোট করবে। যেহেতু তাঁদের দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, এ জন্য তাঁদের মনোনীত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। জোটের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রার্থীদের জোটের প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে বাধা নেই। তাঁদের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরার চারটি আসনই দাবি করা হয়েছে। সমঝোতা হলে জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন করবেন, না হলে স্বতন্ত্র হিসেবে তাঁরা ভোটে যাবেন।