আ.লীগে মনোনয়নযুদ্ধ, বিএনপির প্রার্থী 'ঠিক'

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুর সদর ও সিটির একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী একাধিক। প্রার্থিতা নিয়ে জোর লড়াই হবে বলে ধারণা নেতা-কর্মীদের। আর একাধিক প্রার্থী থাকলেও বিএনপির গাজীপুর জেলা সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন দলটির প্রার্থী হচ্ছেন বলে অনেকটাই নিশ্চিত।             

জাতীয় সংসদের ১৯৮ নম্বর আসনটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯ থেকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এবং গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ পর্যন্ত ১০টি সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ পাঁচবার, বিএনপি চারবার এবং জাতীয় পার্টি একবার জয়লাভ করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকি ১ লাখ ২৫ হাজার ৯০৩ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। বিএনপির প্রার্থী ফজলুল হক পেয়েছিলেন ৭৪ হাজার ৮৯৯ ভোট। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন মেহের আফরোজ। তিনি এখন মহিলা এবং শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।

এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২ হাজার ২৪৫ জন। এ আসনের ১২৭টি ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ৯৯৮ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৪৭ জন।

 আওয়ামী লীগে মনোনয়ন লড়াই

আসন্ন নির্বাচনেও মনোনয়নপ্রত্যাশী মেহের আফরোজ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় গত ১০ বছরে অনেক উন্নয়নকাজ হয়েছে। এলাকার সব রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হয়েছে। বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি প্রার্থী হলে জনগণ তাঁকে আবার নির্বাচিত করবে।

তবে এবার মেহের আফরোজের মনোনয়ন পাওয়া তুলনামূলক কঠিন হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। তাঁর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সাংসদ মো. আখতারুজ্জামান। এ ছাড়া মনোনয়ন চেয়েছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) ও আওয়ামী লীগ নেতা সতেন্দ্রনাথ ভক্ত।

তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, মনোনয়ন নিয়ে মূল লড়াইটা হবে মেহের আফরোজ এবং আখতারুজ্জামানের মধ্যে। মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের দুই নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ-তদবির অব্যাহত রেখেছেন।

আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এমপি (সাংসদ) থাকাকালীন অশান্ত কালীগঞ্জকে শান্ত করেছি। কালীগঞ্জের প্রতিটি ইউনিয়নে ১৮০ কিলোমিটার সড়ক করেছি। কালীগঞ্জবাসী আমাকে ভালোবাসেন। আমাকে মনোনয়ন দিলে ভোট দিয়ে আমাকে জয়ী করবেন তাঁরা।’

স্থানীয় লোকজন জানান, মেহের আফরোজের পক্ষে রয়েছেন ওই আসনের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ। তবে চাপা ক্ষোভ রয়েছে নেতা-কর্মীদের অন্য আরেকটি বড় অংশের মধ্যে। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তাঁরা চান নতুন কোনো মুখ।

 বিএনপির প্রার্থী ‘ঠিক’

বিএনপি থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন গাজীপুর জেলা সভাপতি ফজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনির হোসেন ও যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এলবার্ট পি কস্টা। তবে দলটির প্রার্থী হিসেবে ফজলুল হকের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত। ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফজলুল হক বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে আমরা কালীগঞ্জে অনেক সুসংগঠিত, যেকোনো মুহূর্তে নির্বাচন দিলে আমরা প্রস্তুত।’

 জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খানের স্ত্রী উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি রাহেলা পারভীন এবং মজনু গাজী। তবে মাঠে বেশি সক্রিয় আজম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কালীগঞ্জে লাঙ্গলের অবস্থান অনেক ভালো। দলের কাছে তিনি মনোনয়ন চেয়েছেন। মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন করবেন।