শেষ মুহূর্তে আলোচনায় সামাদ ও নজরুল

নজরুল ইসলাম ও আজিজুস সামাদ
নজরুল ইসলাম ও আজিজুস সামাদ

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে তিনটি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। এবার বিএনপি থেকে প্রার্থী দেওয়ার দাবি থাকলেও তিনিই শেষমেশ জোটের মনোনয়ন পেতে পারেন—এমন আলোচনা চলছে শুরু থেকেই।

তবে এখন শেষ মুহূর্তে আলোচনায় যোগ হয়েছে আরও দুটি নাম। তাঁরা হলেন এই আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ আজাদ (ডন) ও যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী নজরুল ইসলাম। দুজন এর আগে এখানে দুটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। আজিজুস সামাদ আজাদ ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে এবার মনোনয়নবঞ্চিত হলে তিনি ঐক্যফ্রন্টের দিকে ঝুঁকতে পারেন—এমন আলোচনা এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে। আর নজরুল ইসলাম সম্প্রতি দেশে এসে গণফোরামে যোগ দিয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

এই আসনের বর্তমান সাংসদ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। ২০০৫ সালে এই আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ হন শাহীনুর পাশা চৌধুরী। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। তবে এম এ মান্নান ও নজরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তখন নজরুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন বর্তমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মোহাম্মদ আবদুল মান্নান আবার সাংসদ হন। ওই নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আজিজুস সামাদ আজাদ।

>নজরুল ইসলাম সম্প্রতি দেশে এসে গণফোরামে যোগ দিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

আজিজুস সামাদ বলেছেন, তিনি দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থাশীল। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। শনিবার তিনি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক করবেন। তিনি বলেছেন, ‘২০০৫ সালে বাবার (আবদুস সামাদ আজাদ) মৃত্যুর পর থেকে মাঠে আছি। কিন্তু তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে বারবার আমাকে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই জনগণের চাপে বাধ্য হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে। তবে কীভাবে নির্বাচন করব, সেটা চূড়ান্ত করিনি।’ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা এ মুহূর্তে বলা যাবে না। তবে নির্বাচনে অংশ নেব, এটা নিশ্চিত।’

লন্ডনপ্রবাসী নজরুল ইসলাম যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিলেট জেলার আহ্বায়ক ছিলেন। একই সঙ্গে ছাত্রজীবনে সিলেট এমসি কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) ছিলেন। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন জাতীয় রাজনীতিতে একটা পরিবর্তন এসেছে, যেটা গত ছয় মাস কিংবা দুই মাস আগেও ছিল না। এ কারণে আমি প্রার্থী হতে উৎসাহবোধ করছি। ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন পেলে এখানে নির্বাচন করব।’

সাবেক সাংসদ শাহীনুর পাশা চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি এখানে বারবার জোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এবারও আমিই জোটের মনোনয়ন পাব বলে শতভাগ আশাবাদী।’