স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী চান আ.লীগের নেতা-কর্মীরা

আসলামুল হক, সাবিনা আক্তার, কাজী ফরিদুল হক, মাজহারুল আনাম
আসলামুল হক, সাবিনা আক্তার, কাজী ফরিদুল হক, মাজহারুল আনাম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ২০ জন। তাঁদের মধ্যে আছেন বর্তমান সাংসদ আসলামুল হক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সাবিনা আক্তার। তবে এই আসনের তিনটি থানার নেতা-কর্মীরা বলছেন, প্রার্থী হিসেবে তাঁরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কাউকে চান।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড এবং সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ সংসদীয় আসন। মোট ভোটার ৪ লাখ ৬ হাজার ৫৩৪। এই আসন থেকে পরপর দুবারের নির্বাচিত সাংসদ আওয়ামী লীগের আসলামুল হক। ২০০৮ সালে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিএনপির এস এ খালেককে প্রায় ৬৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন।

এই সংসদীয় আসনের দারুস সালাম, রূপনগর ও শাহ আলী থানার নেতা-কর্মীরা বলছেন, এবার এই আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, অভিনেতাসহ নানা ধরনের মানুষ আছেন। তবে তাঁরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কাউকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান।

এ বিষয়ে রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত দুই মেয়াদে এলাকায় এক ব্যক্তির শাসন কায়েম হয়ে আছে। তাঁর কাছে দলীয়, নির্দলীয় সবাই জিম্মি। এখানে অন্য কারোর কিছু বলার কিংবা করার স্বাধীনতা নেই।

দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের আরেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এক-দুজন ব্যক্তির অপকর্মের দায় দলের সবার ওপর এসে পড়বে, এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না। এবার যাঁরা মনোনয়ন ফরম তুলেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেক যোগ্য ও ত্যাগী নেতা আছেন। আশা করব দল নতুন কাউকে বেছে নেবে।’

দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, আসলামুল হক ও সাবিনা আক্তারের বাইরে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারীদের তালিকায় আছেন দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মাজহারুল আনাম ও সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হক, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম হানিফ, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফ ইফতেখার, অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল, লুৎফর রহমান, মোবাশ্বের চৌধুরী প্রমুখ।

সব মিলিয়ে এই সংখ্যা ২০। এর মধ্যে ডিপজল দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

কথা হয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ও দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হকের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘দলের সভানেত্রী বলেছেন, যাঁরা মনোনয়ন ফরম কিনেছেন, তাঁরা সবাই যোগ্য, পরিশ্রমী। এখন জরিপের ভিত্তিতে তিনি মনোনয়ন দেবেন। ছোটবেলা থেকে আমি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এখন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ৩০ বছর ধরে আমি এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখন নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মোল্লার ভাষ্য, এই আসনটা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এবারও আওয়ামী লীগ থেকে যিনিই প্রার্থী হন না কেন, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।

তবে অনেক নেতা-কর্মীর ধারণা, লড়াইটা এত সহজ হবে না। তাঁরা বলছেন, মনোনয়ন নিয়ে এর মধ্যে দলে যে কোন্দল শুরু হয়েছে, তা নিরসন হওয়া দরকার। না হলে বিএনপি এর সুযোগ নেবে।