বিএনপির প্রার্থী ঠিক, জোটের সঙ্গে আলোচনা শুরু

>
  • আজকালের মধ্যে আসন সমঝোতা সম্পন্ন হবে
  • সমঝোতার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ
  • কেউ কেউ সবুজসংকেত পেয়েছেন বলে দাবি করছেন

পরপর দুই দিন টানা বৈঠক করে প্রায় ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছে বিএনপি। তবে মনোনীত ব্যক্তিদের নাম এখনই ঘোষণা করতে চাইছে না দলটি। জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার পর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে তা আগামীকাল সোমবার বা পরশু মঙ্গলবার প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্র জানায়, আজ-কালের মধ্যে ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা সম্পন্ন হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। অবশ্য মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের কারও কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কেউ কেউ মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন বা সবুজসংকেত পেয়েছেন বলে দাবি করছেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঠিক করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা গত শুক্রবার রাতে ও গতকাল শনিবার দিনভর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। তবে গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, জটিলতার কারণে ১০-১২টি আসনে দলীয় মনোনয়ন ঠিক করা যায়নি।

এর আগে দলটির নীতিনির্ধারকেরা ১৮ নভেম্বর থেকে টানা চার দিন ৩০০ আসনে প্রায় দেড় হাজার দলীয় মনোনয়ন প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নেন। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ছিলেন এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানান, চার দিনের সাক্ষাৎকারে লন্ডনে নির্বাসিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। তিনি সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং কারাবন্দী মা ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণা করেন। এই দুঃসময়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাতে কেউ না যান, সে বিষয়ে সবাইকে ওয়াদাবদ্ধ করান।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা আগামীকাল সোমবার বা পরশু মঙ্গলবার প্রকাশ করা হবে। এর আগে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা যাতে প্রকাশ না হয়, সে জন্য নীতিনির্ধারকেরা সতর্কতা অবলম্বন করছেন। কারণ, বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা দেখে ক্ষমতাসীনরা যাতে ভিন্ন কোনো কৌশল নিতে না পারে।

বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, এবার অধিকাংশ আসনে বিএনপি তাদের মূল প্রার্থীর সঙ্গে এক বা একাধিক বিকল্প প্রার্থী প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেবে। যাতে বাছাইয়ে মূল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র কোনো কারণে বাতিল হয়ে গেলে বিকল্প প্রার্থীদের একজন ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও বিএনপি কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ রাখছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।

বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো তাদের প্রার্থী তালিকা বিএনপির নীতিনির্ধারকদের কাছে দিয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় পৌনে ২০০ আসন। এর মধ্যে দুই জোটের প্রায় সব দলই জিতে আসার সম্ভাবনা আছে তাদের এমন প্রার্থীদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করে একটি ন্যূনতম চাহিদাও জানিয়েছে।

ওই সূত্র জানায়, দুই জোটের শরিকদের সঙ্গে পৃথকভাবে আসন সমঝোতা নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করছেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা। আজ-কালের মধ্যে সবার সঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত। শরিকদের সঙ্গেও আলাদা আলাদাভাবে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।