পুরোনোতে ভরসা আ.লীগের

শামসুল হক টুকু,আহম্মেদ ফিরোজ কবির,মকবুল হোসেন,শামসুর রহমান শরিফ,গোলাম ফারুক
শামসুল হক টুকু,আহম্মেদ ফিরোজ কবির,মকবুল হোসেন,শামসুর রহমান শরিফ,গোলাম ফারুক

পাবনার পাঁচটি আসনের একটিতে এবার নতুন মুখকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাকি চারটিতে পুরোনো সাংসদেরাই নৌকার মাঝি হয়েছেন। গতকাল রোববার চিঠি হাতে পেয়ে খুশি এসব নেতা। তবে হতাশ মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে বর্তমান সাংসদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক, পাবনা-২ (সুজানগর ও বেড়ার একাংশ) জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-৩ ( চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) বর্তমান সাংসদ মকবুল হোসেন, পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ এবং পাবনা-৫ ( সদর) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সাংসদ গোলাম ফারুক।

তাঁদের মধ্যে আহম্মেদ ফিরোজ কবির নতুন মুখ। তিনি পাবনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ প্রয়াত তফিজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। এর আগে তিনি সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর দলের ১০ জন তৃণমূল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচটি আসনে নবীন-প্রবীণ মিলে ৬৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে সাবেক আমলা, সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, সাবেক ছাত্রনেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন। প্রচার-প্রচারণাসহ বিভিন্নভাবে গত কয়েক মাসে তাঁরা বড় অঙ্কের টাকা খরচ করেছেন। ফলে চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রকাশের পর তাঁদের অনেকে আশাহত হয়েছেন।

পাবনা-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ। এলাকায় বড় সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে এই নেতার। মনোনয়ন পেয়ে তাঁরা কিছুটা হতাশ। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে রাজি নন কেউ।

পাবনা-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের। চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রকাশের পর তিনি বলেন, ‘দলীয় প্রধান যাঁকে দিয়েছেন, আমরা তাঁর পক্ষেই কাজ করব।

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমরা নৌকাকে আবার বিজয়ী করব। সে অনুযায়ী দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’

সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব সমর্থন করতেন বর্তমান সাংসদ খোন্দকার আজিজুল হককে। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। প্রতিক্রিয়া জানতে গিয়ে তাঁর মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান সমর্থন করতেন মনোনয়নপ্রত্যাশী এ কে এম কামরুজ্জামান খানকে। শাহিনুজ্জামান বলেন, দলীয় প্রধান যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাঁরা তাতে খুশি।

পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন ১২ জন। তৈরি হয়েছিল সাংসদবিরোধী জোট। অন্যদিকে পাবনা-৪ আসনে ভূমিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এককাট্টা ছিলেন তাঁর পরিবারের দুই সদস্যসহ আরও সাতজন। চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রকাশের পর সবাই চুপ। তবে পাবনা-৫ আসনে প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন সাংসদ গোলাম ফারুক। তিনি মনোনয়ন পাবেন না বলে চলছিল নানা গুঞ্জন। শেষ মুহূর্তে দলীয় টিকিট হাতে পেয়ে খুশি নেতা-কর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রেজাউল রহিম বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সব নেতা-কর্মীর আস্থা আছে। তিনি দলের জন্য যেটা ভালো মনে করেছেন, সেটাই করেছেন। নেতা-কর্মীরা জননেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এখন সবাই সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।