সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মিলন না মিজান?

মিজানুর রহমান চৌধুরী ও কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। ছবি: সংগৃহীত
মিজানুর রহমান চৌধুরী ও কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) এবার বিএনপির  প্রার্থী কে হচ্ছেন—এ নিয়ে চলছে শেষ মুহূর্তের জল্পনাকল্পনা। এখানে বিএনপির মনোনয়ন–লড়াইয়ে আছেন দলের জেলা কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী।

দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও এই আলোচনা চলছে—মিলন, না মিজান, কে হচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী?

এই আসনে বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি আবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

সুনামগঞ্জের এই আসনে জাতীয় নির্বাচন মানেই মুহিবুর রহমান মানিক ও কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের ভোটযুদ্ধ। এবারও তাই হবে? নাকি মিলনের জায়গায় আসছেন মিজানুর রহমান চৌধুরী—এই প্রশ্ন নির্বাচনী এলাকা মানুষের মুখে মুখে।

এই আসন জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার একটি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৪ হাজার ১৯৭ জন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৬২ হাজার ১০৪ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৭৮ ভোট। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এখানে আবার সাংসদ নির্বাচিত হন মুহিবুর রহমান মানিক।

দলে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিজানুর রহমান চৌধুরীর হয়ে নেতা-কর্মীরা দুই বলয়ে বিভক্ত।

কমিল উদ্দিন আহমদ মিলনের সমর্থক ছাতক পৌর যুবদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মিলন তিনবারের সাবেক সাংসদ। আমরা যেটুকু জানি, তিনি এবারও এখানে বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন। এটা প্রায় নিশ্চিত। এখন শুধু ঘোষণার বাকি আছে।’

অন্যদিকে, মিজানুর রহমান চৌধুরী সমর্থক দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান মাস্টার বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা পরিবর্তন চায়। মিজানুর রহমান এখানে দলকে শক্তিশালী করেছেন। তিনি তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতা। আমরা আশাবাদী, এবার মিলন নন, মিজানই বিএনপির প্রার্থী হবেন।’

কলিম উদ্দিন আহমদ এখানে প্রথম সাংসদ হন ১৯৮৮ সালে। এরপর ১৯৯৬ সালে এবং ২০০১ সালের আবার সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। এবারও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে আছেন।

কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, ‘এই নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি নেতা-কর্মীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে। গ্রামে গ্রামে দলকে সংগঠিত করেছি। বিএনপি বড় দল। মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার সবার আছে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় এই আসনে এবারও আমি মনোনয়ন পাব বলে আশাবাদী।’

অন্যদিকে, মিজানুর রহমান চৌধুরী ২০০৮ সালের নির্বাচনেও এখানে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবার তিনি বেশ জোরেশোরেই আলোচনায় আছেন। তিনবারের সাবেক সাংসদকে রেখে কেন তাঁকে দল মনোনয়ন দেবে—এই প্রশ্ন ছিল মিজানুর রহমান চৌধুরীর কাছে। তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের জেলা সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, সিলেট এমসি কলেজছাত্র সংসদের ভিপি ছিলাম। দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করেছি। বিভিন্ন সময়ে নির্যাতিত হয়েছি, জেল খেটেছি, গুলিবিদ্ধ হয়েছি। ২০০৯ সালে ছাতক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। এবার মানুষ পরিবর্তন চায়, নতুনত্ব চায়, এলাকার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি, আমি মনোনয়ন পাব।’