'উন্মুক্ত' রাখার দাবি আ.লীগের

পীর ফজলুর রহমান  ও মতিউর রহমান
পীর ফজলুর রহমান ও মতিউর রহমান

সুনামগঞ্জের পাঁচটি নির্বাচনী আসনের মধ্যে চারটির বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের। তাঁরাই এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। সুনামগঞ্জ-৪ আসনে (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) এখনো দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেনি আওয়ামী লীগ। এখানে জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ আবারও জোটের প্রার্থী হচ্ছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তবে আসনটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ‘উন্মুক্ত’ রাখার দাবি তুলেছে।

গত দুটি নির্বাচনে সুনামগঞ্জ–৪ আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিল। এবার আওয়ামী লীগ থেকে এখানে প্রার্থী দেওয়ার জোর দাবি ছিল। কিন্তু গতকাল ঘোষণা হওয়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় এই আসনে কোনো প্রার্থীর নাম দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী দেওয়া না হলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদ নির্বাচন করতে পারেন, এমন আলোচনা ছিল আগে থেকেই। গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জেলা সদরে আমাদের কোনো এমপি নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্বাচনের বাইরে রাখলে নেতা-কর্মীরা কোথায় যাবেন। তাঁরা আশ্রয় চাইছেন। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শের নেতা-কর্মীদের এক জায়গায় রাখতেই আমি নির্বাচন করতে চাই। এ জন্য আসনটি উন্মুক্ত রাখার জন্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানাব।’ মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি যা করি, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার মতামত নিয়েই করব। আশা করি, তিনি আমাকে এখানে নির্বাচন করার অনুমতি দেবেন।’

এই আসনের বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। ২০১৪ সালের নির্বাচনের তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন। দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ নিজে সুনামগঞ্জ এসে এখানে তাঁকে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন।

জেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক রশিদ আহমদও বলছেনন, এখানে এবারও জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকবে। বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত।

তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ইশতিয়াক শামীম বলেছেন, ‘আমাদের জানামতে, সুনামগঞ্জ-৪ আসন নিয়ে জোটের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আমরা এখনো আশাবাদী, এবার এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন দলের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির বেগম মমতাজ ইকবাল। ২০০৯ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি মারা গেলে উপপনির্বাচনে সাংসদ হন মতিউর রহমান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন। পরে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মতিউর রহমান, এনামুল কবির ইমন, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ শামছুন্নাহার বেগম দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেন।

মনোনয়ন পেলেন পুরোনোরাই

সুনামগঞ্জের পাঁচটি নির্বাচনী আসনের মধ্যে চারটির বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের। এবারের নির্বাচনেও তাঁরা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এঁরা হলেন সুনামগঞ্জ-১ আসনে (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধরমপাশা) মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে (দিরাই-শাল্লা) জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে (দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুর) এম এ মান্নান এবং সুনামগঞ্জ-৫ আসনে (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) মুহিবুর রহমান মানিক।