পিঠা ভাগাভাগিতেও টানাটানি হয়: ড. কামাল

আসন ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আসন ভাগাভাগি একটি চ্যালেঞ্জের কাজ। পিঠা ভাগের সময়ও টানাটানি করতে হয়।

আজ সোমবার বেলা তিনটায় রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পাবলিক পলিসি’ নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গণফোরাম এবার বিএনপিসহ চারটি দলের সঙ্গে জোট বেঁধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবে। জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ‘পিঠা ভাগ করতে গেলেও টানাটানি করতে হয়। এই কাজ একটা চ্যালেঞ্জ। আমি নিজেও ভাবতে পারিনি, আমাদের এই জোট এত দ্রুত গঠন করা যাবে। আপনারা অবশ্যই বোঝেন যে, যেকোনো জায়গায় যেকোনো সমাজে কিছু কাড়াকাড়ি হবে। ভাগ করা মানে কী? কেউ পাবে কেউ পাবে না।’

আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘প্রার্থীদের আওয়ামী লীগ চিঠি দিয়েছে। আজকে বিএনপি শুরু করেছে। আমরাও আশা করি কালকের মধ্যে দিয়ে দেব। কাল না হলে পরশুর মধ্যে দিতেই হবে। কাজগুলো কঠিন। কিন্তু কাজগুলো এগিয়ে নিতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমেদের একটি ‘ফোনালাপ ফাঁস’ হয়েছে। সেখানে ‘ঐক্যফ্রন্ট ব্ল্যাকমেল করছে’ এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের কালচার হয়ে গেছে এসব ভাষা ব্যবহার করার। গণতন্ত্রকে লালন করতে হলে আমাদের সকলের উচিত ভাষার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা। ভদ্রভাবে কথা বলা।’

ভোটকেন্দ্র পাহারা দিয়ে কামাল হোসেন গৃহযুদ্ধের কথা বলছেন-এমন অভিযোগ নিয়ে গণফোরামের সভাপতি বলেন, ‘ভোট পাহারা দেওয়া কি গৃহযুদ্ধ নাকি? কে বলেছে, নামও নিতে চাই না। ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার সঙ্গে গৃহযুদ্ধের কী সম্পর্ক? আমার বুদ্ধিতে কুলোয় না, কেন বলল।’ তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কায়দায় ভোটদানে বাধা দেওয়া হলে তা স্বাধীনতাবিরোধী কাজ হবে। সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে পাহারা দিলে হবে না, দায়িত্বশীল সবাইকে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।

রাজনীতি আর ব্যবসা এক জিনিস নয়, উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে অনেকবার প্রধানমন্ত্রী বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার জন্য তিনি রাজনীতি করেননি। একাত্তরে স্বাধীনতা কোনো দিন সম্ভব হতো না, যদি মাথা কেনা সম্ভব হতো। বঙ্গবন্ধুর একটি কথা ছিল, গরু-ছাগলের মাথা কেনা যায়, কিন্তু মানুষের মাথা কেনা যায় না।

সভায় সদ্য যোগ দেওয়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া গণফোরামে এসে কী করবেন, সে বিষয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সমান সুযোগ তৈরি, মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ও জনসেবার মানোন্নয়ন করবে গণফোরাম। ঐক্যফ্রন্টের মূল লক্ষ্য হবে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা। তিনি এ জন্য সাধারণ মানুষের পরামর্শ চান। তিনি একটি ‘ফরম্যাট’ তৈরি করেছেন যেখানে যে কেউই নিজেদের আইডিয়া গণফোরামকে দিতে পারবেন। দেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মানুষের এই আইডিয়া ব্যবহার করা হবে বলে তিনি জানান।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু প্রমুখ।