চারটি আসনে নতুন মুখ

টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে বর্তমান সাংসদেরা এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাননি। এই চারটি আসনে নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে জেলার আরও একটি আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদকে দল থেকে এবং একই আসন থেকে জাতীয় পার্টি থেকেও আরেকজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা গতকাল সোমবার নিজ নিজ এলাকায় এলে দলীয় নেতা–কর্মীরা তাঁদের বরণ করে নেন। নতুন প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের বর্তমান সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জেলা শাখার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান। খন্দকার আসাদুজ্জামান ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও তিনবার এই আসন থেকে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনেও খন্দকার আসাদুজ্জামানসহ ১৩ জন এই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়নপ্রাপ্ত তানভীর হাসান বলেন, তিনি কয়েক বছর ধরে গোপালপুর-ভূঞাপুরের প্রতিটি গ্রামে ঘুরে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে তুলে ধরছেন। তিনি এই আসনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে পারবেন।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের বর্তমান সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আমানুরের বাবা আতাউর রহমান খান। আতাউর রহমান খান সোনালী ব্যাংকের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক। সাংসদ আমানুর ২০১২ সালে এই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় তিনি দুই বছরের অধিক সময় ধরে কারাগারে আছেন। আমানুর ছাড়াও এই আসনে আরও ১০ জন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের বর্তমান সাংসদ খন্দকার আবদুল বাতেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। এই আসনে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আহসানুল ইসলামকে। আহসানুল ইসলাম ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী খন্দকার আবদুল বাতেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে খন্দকার আবদুল বাতেন দলীয় মনোনয়ন পান। আহসানুল ইসলাম বলেন, দলীয় নেতা–কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে রয়েছেন। তিনি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে নিয়েই বিজয়ী হতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সাংসদ অনুপম শাহজাহান এবার মনোনয়ন পাননি। এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম। জোয়াহেরুল এই প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পরেই এই আসনের সাংসদ শওকত মোমেন শাহজাহান মৃত্যুবরণ করেন। পরে উপনির্বাচনে শওকত মোমেনের ছেলে অনুপম শাহজাহান মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন। জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, দুই উপজেলার সব নেতা–কর্মী এবং জনপ্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে আছেন। তিনি বিজয়ী হয়ে আসনটি দলকে উপহার দিতে পারবেন।

এদিকে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বর্তমান সাংসদ ছানোয়ার হোসেনকে গতকাল সন্ধ্যায় দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এই আসন থেকে জাতীয় পার্টিও তাদের দলের জেলা শাখার আহ্বায়ক শফিউল্লাহ আল মুনিরকে দলের মনোনয়ন দিয়েছে। তবে এই আসনে শেষ পর্যন্ত কে মনোনয়ন পান, তা এখন দেখার বিষয়।

তবে তিনটি আসনে আগের সাংসদেরাই মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁরা হলেন টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে হাসান ইমাম খান এবং টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে একাব্বর হোসেন।