মনোনয়নপত্র জমা দিতে এলেন সরকারি গাড়িতে, ফিরলেন ব্যক্তিগত গাড়িতে

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর ব্যক্তিগত এই গাড়িতে চলে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ, কুষ্টিয়া, ২৮ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর ব্যক্তিগত এই গাড়িতে চলে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ, কুষ্টিয়া, ২৮ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

বুধবার বেলা ২টা ৩০ মিনিট। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সরকারি গাড়ি থেকে নামেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। তিনি বিএনপি থেকে দলীয় প্রতীকে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে কয়েকজন নেতা-কর্মীও গাড়ি থেকে নামেন। এরপর দোতলায় উঠে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের কাছে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন।

কিছুক্ষণ পর জাকির হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা নিচে চলে আসেন। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি (কুষ্টিয়া-ঘ ১১-০০৩১) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পার্ক করা ছিল। ওই গাড়ির চালকের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যার (জাকির) গাড়ি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসেছেন। ওপরে ডিসির কাছে মনোনয়নপত্র ও পদত্যাগপত্র জমা দিতে গেছেন।’ এর আগে তিনি উপজেলায় অফিস করেছেন। বেলা তিনটার দিকে জাকির হোসেন কার্যালয়ের নিচে নেমে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে করে চলে যান। এ সময় তাঁর পেছনে সরকারি গাড়িও চলে যায়।

মনোনয়নপত্র জমা দিতে সরকারি এই গাড়িতে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ, কুষ্টিয়া, ২৮ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
মনোনয়নপত্র জমা দিতে সরকারি এই গাড়িতে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ, কুষ্টিয়া, ২৮ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে তিনি স্বীকার করেন, গতকাল মঙ্গলবার তিনি মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বুধবার তিনি আবারও জেলা প্রশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে না। সরকারি গাড়িতে এসে কেউ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন—বিষয়টি জানা ছিল না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা কোনো ধরনের প্রটোকল ব্যবহার করতে পারবেন না। এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, পতাকাসহ গাড়ি নিয়ে মন্ত্রী-এমপিরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে যেতে পারবেন না। কেউ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য নিজ এলাকায় গেলে পতাকা নামিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যেতে হবে। আচরণবিধি প্রতিপালনে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাহী হাকিমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটিও করা হয়েছে। তাঁরাও বিষয়গুলো দেখবেন।