মুন্সীর সঙ্গে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা ছেলের

কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী ও তাঁর ছেলে একই কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজভিউল আহসান মুন্সী। তবে গতকাল বুধবার কুমিল্লা জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরের কাছে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। আর তাঁর ছেলে রেজভিউল আহসান মুন্সী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হচ্ছেন এমন আশঙ্কা থেকে কৌশলে ছেলেকে দিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করাতে চান মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। এ কারণে বাবা বাদ পড়লেও ছেলে যেন মাঠে থাকতে পারেন, সে জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। আবদুল মালেকও গতকাল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একটি কৌশলগত ব্যাপার। নির্বাচনী পলিসি। আমি বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। রেজভিউলও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর কুমিল্লা-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, তাঁর স্ত্রী কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সহসভাপতি বেগম মাজেদা আহসান মুন্সী, একই কমিটির প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাঁদের ছেলে রেজবিউল আহসান মুন্সী। পরে দলের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বাবা ও ছেলে। দুজনই দলের মনোনয়ন পান।

বিএনপির অন্তত পাঁচজন নেতা জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে আবদুল মালেক রতন এই আসন পাচ্ছেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। এ কারণে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী তাঁর ছেলেকে দিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করানোর জন্য এই কাজ করেছেন। জোটগত নির্বাচন হলে তিনি সরে গেলেও তাঁর ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে থাকবেন। তখন ছেলের জন্য তিনি দলবল নিয়ে মাঠে নামবেন। এই আসনে আবদুল মালেক রতনের ভোট তেমন নেই। তাই এই বিষয়টি মানতে না পেরে তিনি ছেলেকে প্রার্থী করান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১, ১৯৯৬–এর ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬–এর ১২ জুন ও ২০০১ সালে টানা চারবার সাংসদ নির্বাচিত হন মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। ২০০৮ সালে নানা অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁর স্ত্রী বেগম মাজেদা আহসান মুন্সী ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর বিএনপি থেকে সংসদ নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে তিনি ৮১ হাজার ৬৬৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এবার তাঁদের ছেলেও নির্বাচনের জন্য ফরম নিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের অন্তত দুজন নেতা জানান, দেবীদ্বারে ভোটের লড়াইয়ে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী বড় ‘ফ্যাক্টর’। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাঁর পরিবারের জয় নিশ্চিত। তাঁর সময়ে দেবীদ্বারের রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি এলাকার উন্নয়নের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি।

এ প্রসঙ্গে আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। বাকিটা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দেখবে।’