বাবলুর মনোনয়নপত্র জমা নিয়ে উত্তেজনা

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর রংপুরের একটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে গতকাল বুধবার দিনভর উত্তেজনা ছিল। তবে এর মধ্যেই তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, জাতীয় পার্টির হয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলু যেন মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারেন, সে জন্য জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রবেশের সব কটি পথে জাপার নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। বেলা ১১টা থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে সবার অগোচরে একেবারে শেষ মুহূর্তে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে বাবলুর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ইউএনও মেরাজ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর বলেন, ‘জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু চট্টগ্রামের বাসিন্দা। তিনি তাঁর এলাকা থেকে এবার মনোনয়ন পাননি। আমরা জানতে পেরেছি, তিনি (বাবলু) রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসন থেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। এ জন্য তাঁর একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা থেকে রংপুরে এসেছে। এমন খবর জানাজানি হওয়ার পর দলের শত শত নেতা-কর্মী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।’

রংপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন আসাদুজ্জামান সাবলু চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দলগতভাবে আমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমি মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছি। কিন্তু মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন সকালবেলা হঠাৎ জানতে পারলাম কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর পক্ষে লোকজন ঢাকা থেকে রংপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসছেন। এতে নেতা-কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।’

এদিকে জিয়াউদ্দিন বাবলুর নামে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হতে পারে এমন খবরে আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলুর সমর্থকেরা গতকাল সকাল থেকেই বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেন। বিকেলে হঠাৎ একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস পুলিশি প্রহরায় তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদে ঢোকে। এরপরে মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন অপরিচিত লোক নেমে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলুর নামে মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে তাঁরা আবার মাইক্রোবাসে উঠে কিছু দূরে গিয়ে দাঁড়ায়। এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ওই মাইক্রোবাসের লোকজন জিয়াউদ্দিন বাবলুর নামে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরপরই কিছু লোকজন মাইক্রোবাসে হামলা চালান।

এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘কে বা কারা হামলা চালিয়েছে সেটা জানি না। আমার কোনো সমর্থক গাড়িতে হামলা করেনি।’

তারাগঞ্জ থানার ওসি জিন্নাত আলী বলেন, নির্বাচন কার্যালয় চত্বরে কোনো ঘটনা ঘটেনি। এখন দূরে কোনো হামলার ঘটনা ঘটলে অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।